ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

পৌর নির্বাচন

কুয়াকাটার প্রভাব কলাপাড়ায়, পাল্টাতে পারে হিসাব-নিকাশ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২১
কুয়াকাটার প্রভাব কলাপাড়ায়, পাল্টাতে পারে হিসাব-নিকাশ  কলাপাড়া পৌর ভবন। ছবি: বাংলানিউজ

পটুয়াখালী: নির্বাচনী হাওয়া উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে প্রত্যেক পৌর এলাকায়। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেমন প্রার্থীরা ছুটছেন, তেমনি ভোটাররাও কষতে শুরু করেছেন দাবি ও প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব।

বঙ্গোপসাগরঘেঁষা উপকূলীয় জনপদ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার কলাপাড়া পৌরসভাও এর ব্যতিক্রম নয়।  

এই পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে ইভিএমে। গেলো ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একই উপজেলার কুয়াকাটা পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফল অনেকটাই হিসাব ঘুরিয়ে দিয়েছে কলাপাড়া পৌরসভার নির্বাচনী মাঠের। কারণ, শতভাগ জয়ে আশাবাদী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কুয়াকাটা পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত মেয়র আবদুল বারেক মোল্লাকে ওই নির্বাচনে প্রায় হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া স্বতন্ত্রপ্রার্থী মো. আনোয়ার হাওলাদার।

শুরু থেকেই সভা-সমাবেশে জনসমাগম ঘটিয়ে ও নেতা-কর্মীদের সঙ্গ পেয়ে শীর্ষে ছিলেন আবদুল বারেক মোল্লা। আর প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে সরগরম ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। কিন্তু এসব থেকে পিছিয়ে থাকা স্বতন্ত্রপ্রার্থীই বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে নেন।  

স্থানীয়রা বলছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তির কারণে সামনে থেকে দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি না যেতে পারলেও কুয়াকাটায় স্বতন্ত্রপ্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন অনেক নেতা-কর্মী। আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের গেলো একযুগে দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে, বিশেষ করে কলাপাড়া উপজেলাজুড়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকায় এখানে বিএনপির অবস্থানটাও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে নিজেদের বিজয় না হলেও নৌকার পরাজয় চেয়েছেন তারা। আর এতেই কপাল খুলেছে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর।

একই উপজেলার মধ্যে কুয়াকাটা ও কলাপাড়া পৌরসভার অবস্থান হওয়ায় রাজনৈতিকসহ পারিপার্শ্বিক অবস্থান অনেকটাই এক। সেক্ষেত্রে ইভিএমে এখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে নির্বাচনী ফলাফল যে কোনো প্রার্থীর দিকে ঝুঁকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যদিও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ও বর্তমান মেয়র পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের দাবি, তিনি জনগণের পাশে ছিলেন দেখেই গতবারে তাকে ভোট দিয়েছে, এবারও দেবে। গতবার সাড়ে ৭ হাজার ভোট বেশি পেয়ে তিনি জয়ী হন। এবার আশা করছেন তিন হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হওয়ার। তবে জয়ের ক্ষেত্রে কম আশাবাদী নন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির কিংবা স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদার উদ্দিন আহমেদ এবং তাদের সমর্থকরা।

পৌর এলাকার ভোটার আল আমিন জানান, এখানে প্রচার-প্রচারণায় মাঠে আওয়ামী লীগ প্রার্থীই এগিয়ে থাকবেন, তবে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর জনসমর্থন কমও বলা যাবে না। বিশেষ করে কলাপাড়ায় ব্যবসায়ী মহলে তার ভালো একটা পরিচিতি রয়েছে। এর বাইরে প্রচার-প্রচারণার মাঠে বিএনপির অবস্থান কেমন থাকবে সেটা না বোঝা গেলেও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মো. সেলিম মিয়ার অবস্থান বেশ ভালো।

মামুন নামে অপর বাসিন্দা বলেন, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে বিভেদের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে দু’টি বিভক্তি এরইমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। ঠিক এভাবেই কিন্তু পার্শ্ববর্তী কুয়াকাটা পৌরসভায় নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেছে। আর কলাপাড়ায় তো স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও সবাই চেনেন এবং তার সম্পর্কে জানেন। সেক্ষেত্রে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর লড়াইটা এখানেও হাড্ডাহাড্ডি হবে।

চতুর্থ ধাপে ঘোষিত ৫৬টি পৌরসভা নির্বাচনের মধ্যে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কলাপাড়া পৌরসভায় এবার প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। কলাপাড়া পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১২৮৯১। এর মধ্যে নারী ৬৫৫৭, পুরুষ ৬৩৩৪।

সম্প্রতি দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিদার উদ্দীন আহমেদের কর্মী উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম দীপ্তকে (২২) কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি সাধারণ ভোটাররা। ভোটের মাঠে পড়তে পারে এর প্রভাব।

>>> জমি বাড়লেও কৃষিখাতে আয় বাড়েনি মেয়র বিপুলের

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২১
এমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।