ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ইউপি নির্বাচনে হেরেছেন চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২১
ইউপি নির্বাচনে হেরেছেন চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষক ...

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনীতে ছয় মাদরাসা ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে হেরে গেছেন। গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনের কাছে হেরে যান।

তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে তিনি পুননির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। নির্বাচন পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেছেন।

মঞ্জুরুল কবির লক্ষ্মীপুরের বামনী কাজিরদিঘির পাড় আলিম মাদরাাসার সহকারী শিক্ষক এবং বামনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির। ওই মাদরাসার আলিম বর্ষের ছয় ছাত্রের চুল কেটে দিয়ে তিনি আলোচিত এবং সমালোচিত হন। এ ঘটনায় তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।    
   
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বামনী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা তাফাজ্জল হোসেন নৌকা প্রতীকে ৬ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়েছেন। আনারস প্রতীকে মঞ্জুরুল কবির পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৬২ ভোট। আর ইসলামী আন্দোন বাংলাদেশ সমর্থিত প্রার্থী হাসান আহম্মেদ হাতপাখা প্রতীকে ১১৩ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। বামনী ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৭৫৪ জন।

সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জুরুল কবির অভিযোগ করেন, ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে কেন্দ্রে দখল করেছে নৌকার কর্মীরা। নির্বাচনে কারচুপি করে নৌকাকে বিজয়ী দেখানো হয়েছে।

তিনি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রের উদাহরণ দিয়ে বলেন, নৌকার প্রার্থী তাফাজ্জলের বাড়ির পাশের কেন্দ্র থেকে আমার দুই এজেন্টকে শারীরিক নির্যাতন করে বের করে দিয়ে নৌকার সমর্থকরা সেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে। যাতে আমার কোনো কর্মী বা ভোটার প্রবেশ করতে না পারে। ভোট গণনার সময় আমার কোনো এজেন্ট সেখানে উপস্থিত ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৪১৫। তার মধ্যে কাস্টিং ভোট দেখানো হয়েছে ১৯০০ ভোট। সেখানে ১৭৮৪ ভোট নৌকার বৈধ ভোট হিসেবে দেখানো হয়। অথচ ওই কেন্দ্রে সদস্য পদের ভোট দেখানো হয়েছে মাত্র ১১১৩ ভোট। এতে প্রমাণ করে এককভাবে শুধু নৌকাতে সীল মেরে প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জাল ভোট দেওয়ার একটি ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের অনিয়মের উদাহরণ তুলে ধরে ভোট পুনরায় গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, নির্বাচনে প্রচারণা চালানোর সময় আমার মাইক ভাঙচুর এবং পোস্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে। এসব বিষয়ে আমি নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।

বলেন, এসব নিয়ে নির্বাচন কমিশনে কোনো প্রতিকার না পেলে আদালতে যাবো।

বামনী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম হলে ভোট চলাকালীন বা ভোটগ্রহণের সময় সে অভিযোগ দিতে পারতো। এসব বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি।

সম্প্রতি ছাত্রদের নৈতিকতা শিক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির নিজ হাতে কাঁচি দিয়ে ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেন। এ ঘটনার এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গত ৮ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তিনি দেশব্যাপী আলোচিত ও সমালোচিত হন। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ তাকে আটক করে। পরে ভূক্তভোগী এক ছাত্রের মা বাদী হয়ে তার নামে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায়। এতে তিনি প্রায় ১৪ দিন কারাবরণ করে জামিনে মুক্তি পান। মুক্ত হয়েই তিনি ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। চুল কাটার ঘটনাটি ভুল হয়েছে জানিয়ে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করার পেছনে ইউপি নির্বাচন কেন্দ্রীক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র ছিল বলে দাবি করেছেন।

** চেয়ারম্যান হতে চান চুল কাটা সেই শিক্ষক
** ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষকের জামিন
** চুল-কাটা সেই শিক্ষকের জামিন হয়নি
** চুল-কাটা সেই শিক্ষকের জামিন হয়নি
**  চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষক কারাগারে 
**  চুল কেটে দেওয়া শিক্ষকের নামে মামলা
** ৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষক আটক
** এবার লক্ষ্মীপুরে ৬ ছাত্রের চুল কেটে দিলেন শিক্ষক

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।