ঢাকা: ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সম্পন্ন হলেও চেয়ারে বসতে পারছেন না নির্বাচিত হাজার হাজার চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। কেননা, ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ না হওয়ায় অধিকাংশ ইউপিতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে ছয় ধাপে ৪ হাজারের বেশি ইউপিতে ভোট করেছিল ইসি। সে সময় ২২ মার্চ, ৩১ মার্চ, ২৩ এপ্রিল, ৭ মে, ২৮ মে এবং ৪ জুন ভোটগ্রহণ হয়েছিল। এক্ষেত্রে ২০২১ সালের ২১ মার্চের মধ্যে ৭৫২ ইউপির, ৩০ মার্চ ৬৮৪ ইউপির, ২২ এপ্রিল ৬৮৫ ইউপির, ৬ মে ৭৪৩ ইউপির, ৭৩৩ ইউপিতে ২৭ মে এবং ৩ জুন ৭২৪ ইউপির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে, করোনার কারণে নির্বাচন করা সম্ভব না হলে মেয়াদ শেষ হলেও পূর্বের নির্বাচিতরাই স্বপদে থাকার সময় পায়।
সে সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত যারা ইউপিতে চেয়ারম্যান কিংবা সদস্য হিসেবে আছেন, তারাই দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনগুলো সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপরও আগের চেয়ারম্যানরাই অধিকাংশ ইউপিতে পদ ধরে রেখেছেন। নব নির্বাচিতরাই বসতে পারছেন না চেয়ারে। আর এর পেছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশে কচ্ছপ গতি।
ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত বছর মার্চ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট ধাপে ৪ হাজার ১শ’টির মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু গেজেট প্রকাশ হয়েছে ৬শ’টির মতো। অর্থাৎ প্রায় ৭ শতাংশের ৬ শতাংশ ইউপি নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট এখনো প্রকাশ হয়নি। আর এজন্য হাজার হাজার স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা দায়িত্ব নিতে পারছেন না।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, ইউপি নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ করা হচ্ছে উপজেলাভিত্তিক। এক্ষেত্রে অনেক উপজেলায় শুরুর দিকে নির্বাচন হলেও গেজেট প্রকাশ করা যায়নি।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মাঠ কর্মকর্তারা ঠিকমত ভোটের ফলাফলের প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে না। আবার তারা পাঠালেও একটি বিরাট সংখ্যক ইউপির গেজেট প্রকাশের আগে যাচাই করতেও সময় লাগছে।
জানা গেছে, কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিদায়ী কমিশন গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব শেষ করার দিন, প্রায় ২শ’টির মতো নথি সই করে গেছেন। এগুলোর অধিকাংশই হচ্ছে ইউপি নির্বাচনের গেজেট সংক্রান্ত। অর্থাৎ নতুন কমিশন নিয়োগ না হওয়ার পর্যন্ত অবশিষ্ট গেজেটগুলো প্রকাশ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে নব নির্বাচিতদের অপেক্ষার প্রহর আরো বড় হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইসির বাজেট শাখার উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান বলেন, মাঠপর্যায় থেকে প্রতিবেদন এলে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। অর্থাৎ প্রতিটি ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম ঠিকানা ইত্যাদি যাচাই করে তারপর কমিশনের অনুমোদনের জন্য নথি উপস্থাপন করা হয়। অনুমোদন হলে পাঠানো হয় বিজি প্রেসে। এটি একটি লম্বা প্রক্রিয়া। তাই একটু সময় লাগে। এছাড়া মাঠপর্যায় থেকেই বিলম্বে ফলাফলের প্রতিবেদন আসছে।
সম্প্রতি প্রতিটি উপজেলা কর্মকর্তাকে এ নিয়ে জবাবদিহিতাও করা হয়েছে। ফলাফল প্রতিবেদন পাঠাতে বিলম্ব হওয়ার কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২
ইইউডি/এএটি