ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন

বিসিসির কাউন্সিলর প্রার্থী চা-ওয়ালা ওবায়েদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
বিসিসির কাউন্সিলর প্রার্থী চা-ওয়ালা ওবায়েদ

বরিশাল: জীবিকার একমাত্র অবলম্বন চায়ের দোকানটি বন্ধ থাকলে টানাটানি বেধে যায় সংসার চালাতে। তাই ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চায়ের দোকান চালাতে হয় প্রতিনিয়ত।

সেখান থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে মেটাতে হয় সংসার খরচ। এর মাঝেই বিপদে-আপদে আশপাশের মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে কুণ্ঠাবোধ করেন না ৪০ বছরের মো. ওবায়েদ চৌধুরী।

এই চা-ওয়ালাই এবারের বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। নামের শেষে চৌধুরী থাকলেও ওবায়েদ সদা হাস্যোজ্জল। নেই অহমিকা। হাসি মুখেই তিনি লড়বেন অপর চার প্রার্থীর বিপক্ষে।

স্থানীয়রা বলছেন, এলাকার সব শ্রেণির মানুষ ওবায়েদকে পছন্দ করেন। ধনী ও ব্যবসায়ীদের আবাসস্থল হলেও ওয়ার্ডের প্রায় সবার মুখেই শোনা যাচ্ছে তার নাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরের আগরপুর রোডের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের ঠিক বিপরীতে প্রায় ১০ বছর ধরে চায়ের দোকান পরিচালনা করেন ওবায়েদ ও তার পরিবার। যে কারণে শুধু এ ওয়ার্ডেই নয়, বরিশালের অনেকের কাছে ওবায়েদ পরিচিত।

বিসিসি নির্বাচনে লড়তে ওবায়েদ প্রতীক পেয়েছেন রেডিও। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণাও করছেন তিনি। নির্বাচনী ক্যাম্প করেছেন নিজেরই চায়ের দোকানে। এখন একবেলা চা বিক্রি করেন। অন্য বেলায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোট চাইতে বের হন।

বাংলানিউজ কথা বলতে চাইলে ওবায়েদ চৌধুরী বলেন, চায়ের দোকান চালাতে গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। গরিব-মেহনতি মানুষের ভালোবাসাটা অকল্পনীয়। আমার সমপর্যায়ের মানুষদের সিদ্ধান্তে এবারের সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছি।

আমি চা-ওয়ালা বলে হয়তো অনেকে হেয় করে দেখতে পারেন। তবে আমিই প্রথম না আমার আগেও অনেক চায়ের দোকানদার-মুচি কোনো না কোনো নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মানুষের খেদমত করেছে। এমনকি প্রেসিডেন্টও হয়েছেন। আর মনে রাখতে হবে মানুষ ছোট থেকেই বড় হয়ে ওঠে।

ওবায়েদ আরও বলেন, আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো আমার রুজি শতভাগ হালাল। আমার প্রতিটি পয়সার পেছনে শরীরের ঘাম ঝরানো শ্রম রয়েছে। আর লোভী হলে এত কষ্ট না করে অসৎ পথে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা থাকতো। আমার পাঁচ তলা বিল্ডিং নাই, দালান নাই, তারপরও অল্প উপার্জনে আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আর আমার এই অল্প সামর্থ্য দিয়েই মানুষের পাশে সবসময় থাকার চেষ্টা করি, ভবিষ্যতে করে যাবো।

এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন ওবায়েদ। সে বছর নিরপেক্ষ নির্বাচন না হওয়ায় তিনি কাঙ্ক্ষিত ভোট পাননি। এবার যেহেতু ইভিএমে ভোট হবে, তার আশা সুষ্ঠু ভোট করে। পরিবর্তনের প্রত্যাশায় ওয়ার্ডবাসী ওবায়েদকে ভোট দেবেন বলে তিনি মনে করেন।

ওবায়েদ চৌধুরীর মনোনয়নপত্রের প্রস্তাবকারী রিপন সিকদার বলেন, নির্বাচন এলে বড়লোকের পেছনে ছোটে মানুষ। গরিবের কোনো কথা শোনে না কেউ। গরিবের কথা শোনে ওবায়েদ। এজন্য আমরা যারা গরিব তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে কাউন্সিলর প্রার্থী করেছি।

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীদের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাধারণ কাউন্সিলর পদে তরুণদের মধ্যে আলোচনায় আছেন ব্যবসা শিক্ষায় স্নাতকোত্তর তামিম হাসান, আদনান হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর এইচএসসি পাশ আকতারউজ্জামান গাজী হিরু। আলোচনা আছে চিত্র সাংবাদিক সালাউদ্দিন সিকদারকে নিয়েও।

বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।