ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

বিসিসি নির্বাচন: প্রচারণা করেই আলোচনায় ৩ নারী প্রার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
বিসিসি নির্বাচন: প্রচারণা করেই আলোচনায় ৩ নারী প্রার্থী

বরিশাল: আগামী সোমবার (১২ জুন) বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। শেষ মুহূর্তে ব্যাপক প্রচারণায় ব্যস্ত মেয়র প্রার্থীরা।

বাদ যাচ্ছেন না সাধারণ কাউন্সিলর ‍হিসেবে পুরুষ প্রার্থীরাও। কিন্তু তাদের ছাপিয়ে প্রচারণার আলোচনায় উঠে এসেছেন তিন নারী প্রার্থী।

ভোটের প্রচারণার শুরুর দিন থেকে নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সালমা আক্তার; ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রুবিনা আক্তার ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জেসমিন সামাদ শিল্পী জোরালো প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমেই নগরে নিজেদের পরিচিত করে তুলছেন তারা। প্রচারণায় টক্কর দিচ্ছেন ভোটে নামা ১১৫ পুরুষ প্রার্থীকে।

নারী প্রার্থীরা বলছেন, যেখানেই প্রচারের জন্য যাচ্ছেন ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। এখন জনগণ তাদের গ্রহণ করে যদি ভোট দেয়, তারা জয়ী হবে। ভোটাররা বলছেন, নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর ভোট চাইতে এলে সংরক্ষিত হিসেবে তাদের গণ্য করা হয়। কিন্তু সালমা, রুবিনা ও জেসমিন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন, এটা সাহসের ব্যাপার। তা ছাড়া পেশী শক্তির পাশাপাশি পুরুষদের বিপরীতে সমানতালে প্রচারণার মাঠে টিকে আছেন তারা, যা বেশ আলোচনার বিষয়।

বরিশাল নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর নারী একজনই। তিনি সালমা আক্তার; প্রার্থিতা করছেন ঘুড়ি প্রতীকে। তিনি বলেন, নিজের মেধাকে একটু সেবামূলক কাজে খাটানোর চিন্তা থেকেই নির্বাচনে আসা। আমি চাই সমাজের অবহেলিত ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে, তাদের জন্য কিছু করতে। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশটাকে এমনভাবে সাজাচ্ছেন তাতে ভালো নেতা ও কর্মীও প্রত্যাশিত। তাই আমি চিন্তা করলাম একজন সু-শিক্ষিত নারী হয়ে কেন ঘরের কোণে বসে থাকবো। প্রধানমন্ত্রী-স্পিকার দুজনই নারী, সবাই এগিয়ে যাচ্ছে আমি তাহলে কেন পারবো না?

তিনি বলেন, আমি অনায়াসে মানুষের কাছে ছুটে যেতে পারি এবং তাদের সাথে মিশতে পারি সেজন্য যখন ভোট চাইতে মানুষের কাছে গেলে তারাও আমাকে আশ্বস্ত করছেন। আমি নিজের কাজ নিজে করি, তাই সকাল থেকে রাত অব্দি পায়ে হেঁটে ভোটের প্রচারণা চালিয়েছি। আমার কর্মীরাও তাদের কাজ করে যাচ্ছে। প্রথম দিকে সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থী শুনে সবাই অবাক হতো। কিন্তু এখন মানুষ ভোট দেওয়ার কথা বলছে।

১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর একজন রুবিনা আক্তার। রেডিও প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে নানা এ প্রার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর ছিলাম। আমার স্বামী মোশারেফ আলী খান বাদশা ছিলেন এ ওয়ার্ডের বহুবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তিনি মারা গেছেন। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা কমে যায়নি। এখানকার মানুষ আমাদের পরিবারকে অনেক ভালোবাসে। তাই তাদের উৎসাহে এ কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছি। আমি আমার স্বামীর অসমাপ্ত কাজগুলো যেমন করতে চাই, তেমনি তার মতো সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে মিলেমিশে থাকতে চাই। নির্বাচিত হলে আমি সিটি করপোরেশন থেকে যে অনারিয়াম পাবো সেটা আমার ওয়ার্ডের গরিবদের জন্যই বরাদ্দ রাখতে চাই।

তিনি বলেন, সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়েছি। প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ওয়ার্ডবাসীও আমার পাশে থাকার কথা বলছেন এবং ভোট দিয়ে  বিজয়ী করার কথাও বলছেন।

নগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিল প্রার্থী তিনজন। তাদের মধ্যে লাটিম প্রতীকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন জেসমিন সামাদ শিল্পী। তিনি বলেন, এলাকার জনগণ অনেক আগে থেকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে চেয়েছেন। স্থানীয়রা সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বহুবার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ইচ্ছা না থাকায় সেটি আমি করতে পারিনি। এখন বিভিন্ন কার্যক্ষেত্রে, পরিস্থিতিতে, জনগণের ইচ্ছায় সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি যা আশা করেছি, তার থেকে অনেক বেশি সাড়া পাচ্ছি। পরিবার থেকে আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাচ্ছি। নির্বাচনও আমার কাছে উৎসব মনে হচ্ছে। কারণ, মানুষের কাছে গেলে তারা কীভাবে গ্রহণ করে- সেই ভয় নিয়ে যখন যাই তখন সবাই খুশি হয়েই আমাকে গ্রহণ করেছে। পুরুষদের মনোভাব বোঝা না গেলেও নারীদের সাড়া পেয়েছি ব্যাপক। তবে পুরুষরাও আমার কথা বলে, তারা নারী হিসেবে আমাকে না দেখে প্রার্থী হিসেবেই দেখছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।