ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পঞ্চগড় থেকে মফিজুল সাদিক

‘নাম্বার ওয়ান বানাবো পঞ্চগড় পৌরসভাকে’

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
‘নাম্বার ওয়ান বানাবো পঞ্চগড় পৌরসভাকে’ ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পঞ্চগড় সদর থেকে: ৩০ ডিসেম্বর নৌকা-ধানের শীষের ভোটযুদ্ধ হতে যাচ্ছে পঞ্চগড় পৌরসভায়। এবারের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন জাকিয়া আনোয়ার।

১৯৮৫ সালের ১৫ জুন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বড় দলের পক্ষ থেকে এই প্রথম নারী মেয়র প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন তিনি।

বর্তমানে পঞ্চগড় জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া দেশের মধ্যে নাম্বার ওয়ান পৌরসভা বানাতে চান পঞ্চগড় পৌরসভাকে। এ নির্বাচন ও নির্বাচিত হলে পৌরসভার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) শহরের নতুন বস্তি এলাকায় তার নিজ বাসায় বাংলানিউজের মুখোমুখি হন জাকিয়া।

বাড়ি বাড়ি ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এর মধ্য থেকেও পৌরবাসীর চাওয়া-পাওয়া ও সার্বিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন তিনি।

পঞ্চগড় পৌরসভা নিয়ে তার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জাকিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ  মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা আমাকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনীত করেছেন। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে পঞ্চগড় পৌরসভাকে বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান পৌরসভায় রুপান্তরিত করবো। একজন নারীর প্রতি বঙ্গবন্ধুর কন্যার সম্মানের প্রতিদান দেবো’।
 
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী জাকিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষে এই প্রথম পঞ্চগড় পৌরসভায় প্রথম নারী মেয়র প্রার্থী মনোনীত হয়েছি। আমার বিশ্বাস, বর্তমানে যেভাবে সর্বস্তরের মানুষের পাশে আছি, সামনের দিনগুলোতে একইভাবে এগিয়ে আসবো। পৌরবাসী পরিবর্তন চান। সে লক্ষ্যে ৩০ ডিসেম্বর আমার পক্ষেই রায় আসবে’।
 
‘আগের মেয়র (বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম) পৌরসভার কোনো উন্নয়ন করেননি। পথে-ঘাটে চলাফেরা করা যায় না। হাল্কা বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি হয় শহরে, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার বেহালদশা। অধিকাংশ ম্যানহোলের ঢাকনা নেই। কখন যে কোমলমতি বাচ্চারা গর্তে পড়ে যায়, কে জানে? পৌরসভা সব সময় অপরিষ্কার হয়ে থাকে, রাস্তাঘাট গর্তে ভরা। বর্তমানে উন্নয়নের সরকার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আমার বিশ্বাস, উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে পৌরবাসী আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন’।
 
তিনি আরও বলেন, ‘পৌরসভায় কোনো কর্মসংস্থান নেই। যে কারণে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বেকারত্বের অভিশাপে অনেকে মদ, গাঁজা ও ফেনসিডিলের মতো মাদক সেবন করছেন। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে এসব যুব সমাজকে কর্মক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনবো’।
 
‘পঞ্চগড়ে ভালো মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। পৌরবাসীর সামান্য সমস্যা দেখা দিলেই রংপুর কিংবা ঢাকায় দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে হয়। এখানকার চিকিৎসার উন্নয়নে আমি জননেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে যাবো। পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য নেত্রীর কাছে আবেদন জানাবো। আমার বিশ্বাস, তিনি পৌর এলাকায় চিকিৎসার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন’।
 
‘পৌরসভায় দর্জি বিজ্ঞান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করবো। যাতে করে মায়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়’- যোগ করেন জাকিয়া আনোয়ার।

পৌর সড়কের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘পঞ্চগড় পৌরসভায় বাইপাস সড়ক দরকার। মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মহাসড়কে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এটা করতে হবে। আগের মেয়র সেভাবে সড়কের কোনো উন্নয়ন করেননি। মানুষের সঙ্গে শুধু ভালো ব্যবহারই করে গেছেন’।
 
১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন জাকিয়া। জাকিয়া বলেন, ‘১৯৯৮ সালের বন্যার সময় শেখ হাসিনা দিনাজপুরে এসেছিলেন। বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন নেত্রী (শেখ হাসিনা)। সঙ্গে আমরাও ছিলাম। মানুষকে কিভাবে ভালোবাসতে হয় আমি শেখ হাসিনার কাছ থেকেই শিখেছি। সেই থেকে তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছি। উত্তরবঙ্গে যেখানে আওয়ামী লীগের ডাক এসেছে তখন থেকেই সেখানে ছুটে যাই’।
 
পঞ্চগড় পৌর এলাকার মোট আয়তন ২২ বর্গকিলোমিটার। ৯টি ওয়ার্ডে মোট জনসংখ্যা ৬৫ হাজার। মোট ভোটার ৩০ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার প্রায় ১৫ হাজার জন। প্রায় ৭ বছর পরে নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই হতে যাচ্ছে এখানে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব স্থানেই  চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে এ ভোটকে কেন্দ্র করে।

এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মোট মেয়র প্রার্থী তিনজন। আওয়ামী লীগের জাকিয়া আনোয়ার ছাড়াও আছেন বিএনপির প্রার্থী বর্তমান মেয়র পৌর বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও জাসদের প্রার্থী আব্দুল মজিদ বাবুল।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর

** ‘ভোটে ঝোপ বুইজে কোপ দিবো ব্যাটা’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।