ঢাকা, সোমবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন

নালিতাবাড়ী পৌর নির্বাচন

আ’লীগ বিদ্রোহীর কারণে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোটাররা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
আ’লীগ বিদ্রোহীর কারণে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোটাররা

শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবদুল হালিম উকিল বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে (মোবাইল ফোন) প্রতীকে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ভোটাররা দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়েছেন।



এদিকে দলীয় (নৌকা) প্রতীক নিয়ে গণসংযোগ করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।

অন্যদিকে আনোয়ার হোসেন (ধানের শীষ) বিএনপি মনোনীত একক মেয়র প্রার্থী হওয়ায় কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া বহু আগেই দল ত্যাগ করা পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামছুল আলম সওদাগরও (জগ প্রতীক) প্রচরণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

দলীয় সূত্রে প্রার্থী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য পাঁচ প্রার্থী আবেদন করেন। প্রার্থী নির্বাচনে ৩-৪ দিন সভা করেও কোনো সমোঝতা না হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে তৃণমূলের ভোটের আয়োজন করা হয়।

তৃণমূলের ভোটে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক দলীয় মনোনয়ন পান। এ কারণে গোলাম ফারুক নির্বাচন থেকে সড়ে গেলেও আবদুল হালিম উকিল নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অনড় থাকেন।

প্রতিদিন প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের কর্মী সমর্থক নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগে দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দলীয় সমর্থক ও ভোটাররা কিছুটা দ্বিধা দন্দ্বে পড়েছেন।

আওয়ামী লীগ সমর্থীত ভোটার মো. ফয়জুর রহমান জানান, ‘আওয়ামী লীগ দল থাইকা দুইডা প্রার্থী অয়ুনে আমরা বিরাট বিপদের মধ্যে পড়ছি। একজন বয়স্ক ও অভিজ্ঞ এবং আরেকজন দলের সমর্থীত হওনে কারে ভোট দিমু এ নিয়া বিপদে পড়ছি। ’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীকে ছাড়তে পারছিনা। অন্যদিকে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেও কাজ করতে পারছিনা। মূলত নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীরা মহাবিপদের মধ্যে পড়েছেন।

বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল হালিম উকিল বলেন, তৃণমূলের ভোটের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তাই দলীয় ভোটিং থেকে সড়ে গেছি। আমি দুই দুইবার পৌরসভার মেয়র ছিলাম। এখন জনগণের স্বার্থে ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ভোটারদের স্বার্থে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি এবং আশা করছি বিজয়ী হবো।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক জানান, আবু বকর সিদ্দিক আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী। দল তাকে সমর্থন দিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অন্য কারো পক্ষে নির্বাচন করার সুযোগ নাই। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে আব্দুল হালিম উকিলকে দলের সাধারণ সদস্যপদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেহেতু সেই প্রার্থী থাকার কারণে  দলীয় প্রার্থীর জন্য তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. নুরল আমিন বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হলে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসেন বিজয়ী হবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামছুল আলম দল থেকে বহু আগেই চলে গেছেন তার কারণে বিএনপির প্রার্থীর কোনো সমস্যা হবে না।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি দলীয় প্রার্থী। আওয়ামী লীগের ভোটাররা দলের বাইরে ভোট দিবে না। দলীয়  প্রার্থীর পক্ষে সবাই এক যোগে কাজ করছে। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি, আশা করি নির্বাচনে ভোটাররা তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমাকে বিজয়ী করবেন।

১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ৯ দশমিক ২৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় ২৮ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৮১২ জন। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ১৮৫ ও নারী ভোটার ৯ হাজার ৬২৭ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।