ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

চুয়াডাঙ্গা থেকে আসাদ জামান

মোবাইল-নারকেলে আটকে যেতে পারে নৌকা

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
মোবাইল-নারকেলে আটকে যেতে পারে নৌকা ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জীননগর ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা থেকে: দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতীক একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনেও ব্যক্তিগত ইমেজের চেয়ে প্রতীকের ইমেজটাই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।



কিন্তু দেশের ২৩০টির বেশি পৌরসভার কোনো কোনো জায়গায় বড় দুই দলের বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাধারণ প্রতীকের কাছে হেভিওয়েট প্রতীক নৌকা ও ধানের শীষের ‘ধরা’ খাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে চলেছে।

এমনটাই মনে করছেন চুয়াডাঙ্গা ও জীবননগর পৌরসভার বাসিন্দারা।  

স্থানীয়রা বলছেন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম জোয়াদ্দার টোটন।

তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওবায়দুর রহমান জিপুর মোবাইল ফোন মার্কার কাছেই ‘নৌকা’র পরাস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
 
অন্যদিকে জীবননগর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দীনের নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, তার প্রতীক নারিকেল গাছ।   সেখানে নারকেল গাছের জনমত বেশি বলে মনে করেন ভোটাররা।

সরেজমিনে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা, দর্শনা, জীবননগর ও আলমডাঙ্গা- এ চার পৌরসভাতেই বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের। তবে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কারের হুমকি, হস্তক্ষেপ ও স্থানীয় নেতাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত দর্শনা ও আলমডাঙ্গায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা ও জীবননগর পৌরসভায়।

এ দুই পৌরসভায় এখনও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পাশাপাশি একজন করে বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে আছেন। আর দলের প্রতীক নৌকার চেয়েও ভোটের দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন এই দুই বিদ্রোহী প্রার্থী।  

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র ফিরোজ রোডের কেদারগঞ্জের চায়ের দোকানে কথা হচ্ছিল ষাটোর্ধ্ব মোতালেব হোসেনের সঙ্গে।
 
বললেন, ‘নৌকার চেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওবায়দুর রহমান জিপুর মোবাইলের ফিল্ড ভালো। যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারাই মোবাইলে ভোট দেবেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে দাঁড়ানো টোটন এখানে খুব  একটা সুবিধা করতে পারবেন না’।
 
ভোটের ক্যালকুলেশন নিয়ে তরুণ আবুল কালাম আজাদের ধারণাও অনেকটা একই রকম।

তার মতে, ‘নৌকা মানেই আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ মানেই নৌকা। কিন্তু মার্কাটা এবার ঠিক লোকের হাতে পড়েনি। তাই বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে মার্কাটি’।
 
অন্যদিকে জীবননগর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নৌকা প্রতীক বিদ্রোহী প্রার্থীর নারকেল গাছ প্রতীকের কাছে ধরাশায়ী হতে পারে বলে ধারণা করছেন সাধারণ ভোটার ও স্থানীয় লোকজন।

তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন একজন সংস্কৃতিমনা শিক্ষক মানুষ। তার পক্ষে নির্বাচনী ব্যয় সংকুলান করা কঠিন। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে যিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তার জনবল ও অর্থবল দুই-ই আছে। এখানেই মো. নাসির উদ্দিনের নৌকা বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের নারকেল গাছের কাছে পরাস্ত হতে পারে।

জীবননগর মূল সড়কের পাশে চায়ের দোকানে বসে কথা হচ্ছিল হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে।
 
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন তো এখন টাকার খেলা। আওয়ামী লীগ তো দেখে শুনে একজন ভালো মানুষকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু তিনি তো টাকা খরচ করতে পারছেন না। যিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তিনি টাকাওয়ালা লোক। তিনিই বেরিয়ে যেতে পারেন’।

তবে এখানে লড়াইটা হবে নৌকা, নারকেল গাছ ও ধানের শীষের মধ্যে ত্রিমুখী বলেও মনে করেন তিনি।
 
তবে এসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দীন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহ করেন, তাদের দলের লোকজন ভোট দেবেন- এমনটি আমি মনে করি না। এখানে প্রতীকটাই আসল। যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা নৌকা প্রতীকেই ভোট দেবেন। জয়ের বিষয়েও আমি আশাবাদী’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এজেড/এমএ/এএসআর

** নৌকা-ধানের শীষে গর্বিত প্রার্থী
** বিএনপির বিষফোঁড়া জামায়াত
** ‘যোগ্য লোকের পক্ষ নেব’
** আওয়ামী লীগ ৪, বিএনপি ১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।