নান্দাইল, ময়মনসিংহ থেকে: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের দত্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র। মাথার ওপর কড়া রোদ।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই লম্বা এ লাইনে দাঁড়িয়েই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রয়োগ করছেন ভোটাধিকার। ভোটকেন্দ্রে নারী ভোটারদের গমগমে উপস্থিতি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ উপস্থিতি আরো বাড়তে থাকে।
সকাল থেকেই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নারী ভোটারদের অভাবিত চাপ। দীর্ঘ লাইন নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হচ্ছে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কঠোর নজরদারি থাকায় শান্তিপূর্ণভাবেই পুরুষ ও নারী ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। এ নিয়ে সন্তুষ্ট তারাও। কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়াই পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে তারা মহাখুশি।
মাথার ওপর খোলা আকাশ। তপ্ত রোদের আগুনে পুড়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে অপেক্ষা করছেন আছিয়া খাতুন (৫০) ও পারভীন আক্তার (৩৫)। তাদের বাড়ি এ ইউনিয়নেরই কুতুবপুর গ্রামে। প্রখর খরতাপ বাধ সাধতে পারেনি ভোট উৎসবে।
কখন কী ঘটে এ আশঙ্কা মাথায় রেখেই আগেভাগে ভোট দিতে চলে আসেন তারা। ঘর-গৃহস্থালির কাজ শেষ করেই আবার মরিয়ম (৩০), লিজা (৩৫), হাদিসা বেগম (৪০) ও দিলরুবা বেগম (৪৫) এসেছেন ভোট কেন্দ্রে।
কেমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন, প্রশ্নের জবাবে দিলরুবা বেগম বলেন, ‘পছন্দের মার্কা দেখে ভোট দিমু। ’
দিলরুবার সঙ্গে যোগ করে হাদিসা বেগম স্মীত হেসে বলে ওঠেন, ‘মার্কা বুঝি না। গরিবের সঙ্গে কথা দিয়ে বেঈমানি করবে না এমন প্রার্থীকেই সিল মারমু। ’
ভোটের দিনের পরিবেশ সম্পর্কে মরিয়ম ও লিজা একযোগে বলেন, ‘কোনো গ্যাঞ্জাম নাই। খুশিমনে ভোট চলতাছে। ’
স্থানীয় দত্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার শফিউল আলম জানান, এ ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৬৯৯ জন।
সকাল থেকে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি। সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা নাগাদ ভোট পড়েছে প্রায় ৮শ’।
স্থানীয় কালিয়াপাড়া গণসাহায্য সংস্থার ভোটকেন্দ্রে গিয়েও নারী ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি চোখে পড়লো। তবে এখানকার নারী ভোটাররা অভিযোগ করেন, সকাল থেকেই ভোটের গতি মন্থর। বুথগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন ও ছোট পরিসরে।
এ ভোটকেন্দ্রেই আলাপ হয় নারী ভোটার সখিনা, জোছনা ও মনোয়ারার সঙ্গে। পঞ্চাশের কোটায় তাদের বয়স। সকাল ৭টায় তারা ভোটকেন্দ্রে এসেছেন। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ১০টার ঘরে পৌঁছলেও বুথে যেতে পারেননি।
ভ্যাপসা গরমে কাহিল অবস্থার কথা জানান তারা। সখিনা বলেন, ‘সুখ-দুঃখে পাশে থাকবো এমন যোগ্য ব্যক্তিরেই ভোট দিমু। ’
এ ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আইনুল ইসলাম জানান, এখানে মোট ভোটার ২ হাজার ৫৭১ জন। ভোট পড়েছে এখন পর্যন্ত ৬২৫টি।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৬
জেডএস