ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

‘অচল হইলেও ভোটটার দাম আছে’

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৬
‘অচল হইলেও ভোটটার দাম আছে’ ছবি: অনিক খান- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নান্দাইল, ময়মনসিংহ থেকে: বড় ছেলে নাজমুল হকের কোলে চড়ে ভোটকেন্দ্রে এলেন হামিদা বেগম। ডান হাতে লাঠি।

ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর তার দিকেই সবার দৃষ্টি। বুথে ঢোকার পর ছেলে নাজমুল তাকে কোল থেকে নামালেন। টেবিলে ব্যালট পেপার রেখে নিজেই সিল মারলেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভোট দিয়ে আসছেন। ভোট দিতে পেরে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘বয়স তো কম হয় নাই। ১০৫ বছর বয়সে কতো কিছুই দেখছি। অহন অচল হইয়া গেছি। কিন্তু অচল হইলেও তো আমার ভোটের দাম আছে।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কাদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা হামিদা বেগম। তিনি স্থানীয় কাদিরপুর দণিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

কোনো রকমের ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই ঠিকঠাক ভোট দিতে পেরেছেন, এ কথা ভাবতেই তার মুখায়বে যেন রাজ্যের আনন্দের ঢেউ স্পর্শ করে। হামিদা বেগম বলেন, ‘জীবনে শেষ ভোটটা দিলাম। আর তো মনে হয় কোনোদিন ভোট দিতে পারতাম না। পছন্দের প্রার্থীরেই ভোটটা দিলাম। ’
হামিদা বেগমের সঙ্গে এসেছিলেন ছেলে নাজমুলের স্ত্রী শিরিন আক্তারও। তিনি বলেন, ভোট দিতে পেরে মা অনেক খুশি। ’

শরীরে হাঁটার শক্তি নেই জোবেদা খাতুনের। বয়সের ভারে নূজ্ব্য। বয়স প্রায় ১০২। পাকিস্তানিদের হটিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভোট দিচ্ছেন। অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, ‘অনেকবারই তো ভোট দিছি। আইজ ভোট দিয়া মনে শান্তি লাগতাছে। ’

জোবেদা খাতুনের ভোট দিতে আসার অন্যতম কারণ তার নাতি ফুটবল মার্কা নিয়ে এখান থেকে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। সঙ্গে থাকা মেয়ে তহুরা বেগম বলেন, ‘সকাল থেইক্যাই মা কান্দাছে। নাতিরে ভোট দিবো। চেয়ারম্যান পদে ভোট দিবো। তাই মারে নিয়া আইছি। ’

ইউপি নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকা সব চেয়ারম্যান প্রার্থীরাই তার কাছে ভোট চাইতে গিয়েছিলেন। সেই হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণার উত্তাপ ছুঁয়েছে জোবেদা খাতুনের বসতঘরের চৌকাঠও।

জোবেদা খাতুনের মেয়ে বলেন, এলাকার মানুষ ভালো থাকবে, এলাকায় উন্নয়ন হবে এমন স্বপ্ন নিয়েই মা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। নতুন যিনি চেয়ারম্যান হবেন তিনি এলাকার উন্নয়ন করবেন, এমন প্রত্যাশা উচ্চারিত হয় তার কণ্ঠে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৬
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।