নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আজকে এই প্যানেলে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের পক্ষ থেকে শুকরিয়া আদায় করছি কিছুক্ষণ আগেই আমাদের আশার প্রতীক আমাদের নেত্রীকে মেসেজ পাঠাতে পেরেছি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার নারায়ণগঞ্জে আপনার প্যানেলে শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে ১৭টি আসনে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে প্রত্যেকটা আসনে আমাদের সকল প্রার্থী জয়লাভ করতে পেরেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্যানেল পূর্ণ জয় পাবার পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম খুব হার্ড কনটেস্ট হবে এবং কিছু কিছু পদে সমান সমান কিংবা দুই চারটা ভোটের ব্যাবধান থাকবে। কিন্তু এত ব্যাবধান হবে আমি ভাবিনি। যখনই খোকন সাহা বাদলের সাথে কথা বলতাম বারের নেতাদের সাথে কথা বলতাম তারা সবসময় আমাকে বলত যে ইনশাআল্লাহ আমরা গতবারের চেয়ে ভাল রেজাল্ট করবো। এই আত্মবিশ্বাসটা তারা পেয়েছিল কারণ তারা বারের আইনজীবীদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। জনগনের সাথে যারা সম্পৃক্ত থাকে তারা জনগনের মনের কথা বুঝতে পারে।
শামীম ওসমান বলেন, আমি বিশ্বাস করি জুয়েল বলেছে যে খোকন সাহার নামে আইসিটি আইনে মামলা হয়েছে সত্য বলার কারনে। এধরনের মামলা মোকদ্দমা চলবে তবে আমাদের সত্য বলে যেতে হবেই। বিশেষ করে যারা আইনজীবী তাদের সত্য বলতে হবেই। সে বিষয়ে আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না।
তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই বিএনপির প্রার্থীদেরকে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন চেষ্টা করেছেন জয় লাভ করার জন্য। যখন দুই দল খেলা খেলে তখনই খেলাটা সুন্দর হয়। বিকেলে ভোট শেষ হওয়ার পর একটা মৃদু উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এইটুকু উত্তেজনা না হলে সাংবাদিকেরা আবার কিছু পায় না। তাদের তো কিছু দেয়া উচিত। আমরা ওইটুকু উত্তেজনা সাংবাদিকদের জন্য উৎসর্গ করলাম। নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের আমি ধন্যবাদ জানাই তারা নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, আমার ধারণা নারায়ণগঞ্জকে সবসময় আন্ডারমাইন করে দেখা হয়। নারায়ণগঞ্জে যখনই কোন নির্বাচন হয় তার আগেই একটা আশংকা প্রকাশ দেখা যায়। নির্বাচন নিয়ে এইটা ওইটা হবে বলে প্রচার করা হয়। তবে আল্লাহর হুকুমে নারায়ণগঞ্জে যতগুলো নির্বাচন এ পর্যন্ত হয়েছে কোন নির্বাচনে বিন্দু পরিমাণ গণ্ডগোল হয়নি এমনকি একটু ধ্বাক্কা-ধ্বাক্কিও হয়নি। কিন্তু এই নারায়ণগঞ্জকে নেগেটিভ জায়গায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করা হয় এবং এটা নারায়ণগঞ্জের কিছু লোকজনই করে থাকে।
সংসদ সদস্য বলেন, আমি ভেবেছিলাম বিএনপির ভাইয়েরা থাকবে আজকের ফুলটা আমি বিএনপির ভাইদের হাতে দিবো। আমি এখানে এসে আগে আওয়ামী লীগের ক্যাম্পে ঢুকি নি বিএনপির ক্যাম্পে ঢুকেছি। তাদের সাথে আড্ডা দিয়েছি এটাই কালচার হওয়া উচিত। রাজনীতিতে ভিন্ন আদর্শ থাকবে আমরা যার যার আদর্শের কথা বলবো এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ নিয়ে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বার এবং সাংবাদিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। নারায়ণগঞ্জে চিকিৎসা ব্যাবস্থার উন্নতি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা আপনাদের সহযোগিতার প্রয়োজন। মানুষ যখন অসহায় হয় তখন বিচারকের কাছে আসে। আমি বিএনপির আইনজীবীদের সহ সবাইকে অনুরোধ করবো নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস, মাদক, জমিদখলদারদের বিরুদ্ধে এবং যে কোন অবিচার থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সকল আইনজীবী ও সংবাদিকরা ভূমিকা রাখবেন।
শামীম ওসমান বলেন, খোকন সাহার নামে মামলা হয়েছে। আমরা চাই মামলার চার্জশিটও হোক। খোকন সাহা যদি জেলে যায় জেলে যাক। এরপর আমরা দেখবো নারায়ণগঞ্জ কেমন হয়। আপনারা সাংবাদিকেরা তখন লাখ লাখ ছবি তোলার সুযোগ পাবেন। খোকন সাহা জেলে গেলে তখন হয়ত আমরা আবার একটু আগের বয়সে ফিরে যেতে পারবো। নারায়ণগঞ্জ শহরে তখন শুধু মাথা আর মাথা দেখবেন। খোন সাহা জামিন নেবেন না জামিন চাইবেনও না।
এর আগে দুপুর থেকে তিনি জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
এমএমএস