ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

নিপুণের কথায় এগিয়েছি, কিন্তু পাশে আসেনি: আক্ষেপে নানা শাহ

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৪
নিপুণের কথায় এগিয়েছি, কিন্তু পাশে আসেনি: আক্ষেপে নানা শাহ নানা শাহ-নিপুণ আক্তার

আগেরবার আমি ও ডি এ তায়েব নিপুণের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। ভালো কিছু কাজের আশা করেই তাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম।

তারা কথা দিয়েছিল সিনেমা নির্মাণ করবে। একটি কথা মনে রাখবেন, শিল্পী সমিতি কিন্তু সিনেমা নির্মাণ করতে পারে না। কিন্তু নিপুণ কথা দিয়েছিল ৬টি সিনেমা নির্মাণ করবে।

আমি তার কথা অনুযায়ী এগিয়ে ছিলাম। দুটি সিনেমা এন্টি করেছিলাম। কিন্তু তারা আমার পাশে কেউ আসেনি। আমরা শিল্পীরা সম্মান ও ভালোবাসা চাই। এটা যখন আমরা হারিয়ে ফেলি তখন খুব কষ্ট পাই। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে- আমাদের অনেক শিল্পী এখন বেকার। তাদের জন্য শিল্পী সমিতি দুই বছর কি করতে পেরেছে? দুই বছরে শিল্পী সমিতির সফলতা দেখছি না। আক্ষেপের সঙ্গে কথাগুলো বলেছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা নানা শাহ।

দুই বছরে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের কাজের সফলতা না দেখলেও অদ্ভুত সফলতা দেখেছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের টেলিভিশনের নায়ক চঞ্চল চৌধুরী ভারতে পুরস্কার পেয়েছে সেটি নাকি শিল্পী সমিতির আবেদন। এখানে শিল্পী সমিতি কী? এটি তো তার কর্মে পেয়েছে। কাজ করতে হবে, এরকম অদ্ভুত কথা বলে লাভ নেই। ওই কমিটিতে আমরা গিয়ে ভুল করেছি। তাই এবার আগেই ঠিক করেছি মিশা-ডিপজল প্যানেলে আসব। যারা কিছু করতে পারবে তারাই এই প্যানেলে আছে।

আগের প্যানেলে প্রযোজক ছিল না। কিন্তু এই প্যানেলে প্রযোজক-পরিচালক ও শিল্পী তিনটিই আছে। ডিপজল, মিশা, আমি, রোজিনা, তায়েব, জ্যাকি আলমগীর প্রযোজক। আমরা বলব না কি করব, কাজে দেখাব। আমরা কোন অন্যায় চাই না, বিভাজন চাই না। এর আগেও আমরা নির্বাচন দেখেছি কিন্তু এখন কেমন যেন এক অদ্ভুত পরিস্থিতি হয়েছে।

সম্প্রতি চাউর হয়েছে শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন হবে না। তবে নানা শাহ বলেছেন, কেউ নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না। তা হতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, আমি শুনেছি নির্বাচন বন্ধ করে দিবে, হবে না। এসব ফালতু কথা বলে কোন লাভ নেই। নির্বাচন হবেই। আমরা সব শিল্পীরা মিলে নির্বাচন করব। কেউ যদি বাধা দেয়, নির্বাচন বানচাল করতে চায় আমরা তাকে বাধা দেব। কিন্তু শিল্পী সমিতির নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না।

প্রযোজক-পরিচালক এবং সনি সিনেমা হলের মালিক মোহাম্মদ হোসেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমিতিতে ঝামেলা তৈরি করছে। সে কথা উল্লেখ করে তার কাছে অনুরোধ জানিয়ে ‘মাটি ও মানুষ’ সিনেমার এই নায়ক বলেন, মোহাম্মদ হোসেনের কাজ হচ্ছে ঝামেলা তৈরি করা। প্রযোজক সমিতি নষ্ট করে এসেছে শিল্পী সমিতি নষ্ট করতে। তার কাছে আমার হাত জোর অনুরোধ, দয়া করে আপনি বাড়ি চলে যান। আমাদের শিল্পীদের নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। আপনি সিনেমা বানান। আমাদের নিয়ে কেন খেলছেন? দয়া করে আপনি আমাদের শিল্পীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবেন না।

সম্প্রতি নিপুণের সভাপতির খোঁজে মাঠে নেমে সমালোচনায় জড়ান আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুল আলম। তাদের কাছে আশা ব্যক্ত করে নানা শাহ বলেন, নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে বিতর্ক শুনেছি। কিন্তু তাদের কাছে আশা করব, এরকম বিতর্ক যেন আর না হয়। তারা সুস্থ ও সুন্দর একটি নির্বাচন পরিচালনা করবেন সেই আশা ব্যক্ত করছি।

গত নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের ইশতেহারে প্রথম গুরুত্ব ছিল এফডিসিতে প্রধানমন্ত্রীকে আনার বিষয়টি। কিন্তু তারা তা পারেনি। সে প্রসঙ্গে এই অভিনেতা বলেন, মুখে তো অনেক কথাই বলা যায়। আমরা একটি কথাই বলতে চাই- সব শিল্পী এক হব এবং সবাই একসঙ্গে হয়ে বাঁচার চেষ্টা করব। যাতে আমাদের কষ্ট না হয়। সবাই যেন ভালো থাকতে পারি।

প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করি, প্রধানমন্ত্রী নিজে আনন্দের সঙ্গে বলবেন- আমার বাবা এই এফডিসি তৈরি করেছেন। আমি নিজে গিয়ে একদিন শিল্পী সমিতি গিয়ে বসব। আমাদের আনার শক্তি নেই।

এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে বেশ কয়েক জন শিল্পীদের দৌড়ঝাঁপ ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব শিল্পীদের উদ্দেশ্যে ‘আনন্দ অশ্রু’ সিনেমার এই অভিনেতা বলেন, একজন শিল্পীকে সারা বাংলাদেশ চিনে। আর একজন এমপিকে একটা এড়িয়ার লোক চিনে। আমাদের কিছু শিল্পী বোকা তারা এমপি হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। অভিনয় চালিয়ে যান আপনাকে সারা বাংলাদেশের মানুষ চিনবে। আপনি কেন এমপি হওয়ার জন্য দৌঁড়াচ্ছেন।

সর্বশেষ সবার কাছে দোয়া চেয়ে নানা শাহ বলেন, আমরা যারা এক হয়েছি তারা যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এক থাকতে পারি সবাই দোয়া করবেন।

উল্লেখ্য, নানা শাহ ১৯৮২ সালে আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘মাটি ও মানুষ’ সিনেমাতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। তারপর হাসিবুল ইসলাম মিজানের ‘প্রেমের কসম’ ও হাফিজ উদ্দিনের ‘বাজিগর’ সিনেমাতে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করার পর দর্শকদের ভালোবাসা কুড়ান। এরপর ‘পৃথিবী আমাকে চায় না’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘তুমি আমার ভালোবাসা’সহ বেশকিছু সিনেমায় কাজ করেন তিনি। চলচ্চিত্রে প্রথমে নায়ক চরিত্রে ক্যারিয়ার শুরু করলেও খল নায়ক চরিত্রে কাজ করে দর্শকপ্রিয়তা পান নানা শাহ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৪
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।