প্রজন্মের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা তানজির তুহিন। দুই দশকের বেশি সময় ধরে সুর সংগীতে শ্রোতাদের মাতিয়ে চলেছেন তিনি।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা ও বিপর্যস্ত সংগীত অঙ্গন নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এমন সুন্দর একটি দিনের অপেক্ষায় ছিলেন জানিয়ে তানজির তুহিন বলেন, আমাদের সুন্দর একটি দিন চলে এসেছে। এখন আমরা নতুন করে দেশটা সুন্দর করে সাজানোর স্বপ্ন দেখতে পারি। যেসব বাচ্চারা আমাদের এই পথে নিয়ে এসেছে তাদের স্বপ্নগুলো পূরণ করা হবে আমাদের প্রথম কাজ।
তিনি বলেন, সবাই মিলে সুন্দর একটি দেশ গড়ব। আমরা সুখ চাই, শান্তি চাই। সুস্থ কাজের পরিবেশ চাই। আমাদের দেশের মানুষ অনেক বেশি শক্তিশালী এবং অনেক বেশি প্রতিভাবান। আমাদের অনেক শক্তিশালী মানুষ বিদেশে চলে গেছে। কারণ, এই দেশ তাদের ঠিক মতো যত্ন করতে পারেনি। আমরা চাই শক্তিশালী আর কোনো মানুষ যেন দেশ ছেড়ে চলে না যায়। দেশটাকে আরও বড় করে তুলতে চাই। আরও শক্তিশালী করে তুলতে চাই।
যোগ করে এই গায়ক বলেন, এ জন্য আমাদের যে দেশ দরকার সেরকম একজন সরকার দিতেই হবে। না হলে আমরা বারবার রাস্তায় নামব। এই সরকারের মেয়াদ ৫ থেকে ৬ বছর হওয়া উচিত। কারণ তারা শক্তিশালী ভাবে একটা গাইডলাইন তৈরি করে দিয়ে যাক। সেই গাইডলাইন যদি শক্তিশালী হয় তাহলে এরপর থেকে কোনো পালানো সরকার আর আসবে না। আমার ধারণা এরপর থেকে যে সরকারই আসবে আমাদের ভালোবাসবে এবং যত্ন নেবে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর ‘জলের গান’র সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী ও বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দের বাড়িতে গেল ৫ আগস্ট হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাধ্য হয়ে স্ত্রী ঊর্মিলা শুক্লা ও ১৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়েছে তাকে। দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগে রাহুলের বাড়িতে থাকা তিন হাজারের মতো বাদ্যযন্ত্র ভস্মীভূত হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন তানজির তুহিন।
তিনি বলেন, দেশে কিছু হলেই আমরা আক্রান্ত হই। এসব না করে আমাদের ধৈর্য্যশীল হতে হবে। আমাদের ধৈর্য্য কম। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট করা ঠিক না। এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের সবার প্রতি সবার ভালোবাসা কম। শ্রদ্ধা ভক্তিও কমে গেছে। সবাইকে ভালোবাসতে হবে। ৫০ বছরে কেউ পালিয়ে গেছে, আবার কেউ দখল করেছে। আমরা সকলেই চেষ্টা করব এগুলো থেকে বের হতে। এ দেশ থেকে অনেকেই পালিয়ে গিয়েছেন। আমরা আর পালাতে চাই না। যাতে ভবিষ্যতে না পালানো লাগে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রায়ই সংগীত অঙ্গন নিয়ে শুনতে হয় নানান কথা। সেসব নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। বললেন, গানের সুদিন সবসময় ছিল। গানের মাধ্যমে যেমন ভালোবাসা যায়, তেমন অন্যায়ের প্রতিবাদও করা যায়। ৭১ সালেও শক্তিশালী গান হয়েছে। এ সময়েও হয়েছে। বিভিন্ন ক্রাইসের সময়ও গান হয়েছে। করোনার সময় আমরা একটু বিপর্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যে কিছু নেতিবাচক সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে। ওগুলো প্রচারণা পেয়ে খুবই নোংরা জায়গায় চলে গেছে। সেই জায়গা থেকে ফিরিয়ে এনে সুন্দর জায়গায় গানগুলো বসানো যুদ্ধের ব্যাপার। ওটাও একটা যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে সবার শামিল হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২০২৪
এনএটি