জনপ্রিয় সিনে সাংবাদিক আওলাদ হোসেন আর নেই (ইন্নালিল্লাহ...রাজিউন)। বাংলাদেশের অন্যতম সিনিয়র এই সাংবাদিক রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাতে কাজ শেষে জিগাতলার বাসায় ফিরে অসুস্থবোধ করেন আওলাদ হোসেন। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। দ্রুত তাকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আওলাদ হোসেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আজকেও (২ অক্টোবর) তার স্বনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে পত্রিকাটিতে।
জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত সিনে সাংবাদিকতার সঙ্গে ছিলেন আওলাদ হোসেন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শেষ রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শোক প্রকাশ করছেন শোবিজ অঙ্গনের মানুষ ও সাংবাদিকরা।
এদিকে প্রয়াত আওলাদ হোসেনের প্রথম নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে বাদ জুমা ইসলামপুর জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে। এরপর তার লাশ নেওয়া হবে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি ও এফডিসিতে। সেখানে পৃথক দুটি জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। তার পরিবার জানায়, সন্ধ্যায় তার লাশ দাফন করা হবে আজিমপুর কবরস্থানে।
মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন ১৯৬৬ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকার ইসলামপুরের নিজ বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৃত মোবারক হোসেন ও মা লুৎফুন্নেসার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ। হাম্মাদিয়া হাইস্কুলের মানবিক বিভাগ থেকে ১৯৮২ সালে এসএসসি, ১৯৮৪ সালে শেখ বোরহান উদ্দীন কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিভাগ থেকে ১৯৮৭ সালে অনার্স ও ১৯৯০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি।
প্রবীণ এই সাংবাদিক ১৯৮৭ সালে দৈনিক খবরের ম্যাগাজিন ‘সাপ্তাহিক ছায়াছন্দ’তে সহ-সম্পাদক পদে যোগদানের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। দীর্ঘ ১৫ বছরের কর্মজীবন ছেড়ে ২০০৪ সাল থেকে বর্তমান অবধি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এর পাশাপাশি তিনি দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক যুগান্তর, সাপ্তাহিক চিত্রবাংলা, সাপ্তাহিক মনোরমা, সাপ্তাহিক বর্তমান দিনকাল, সাপ্তাহিক চিত্রালী, পাক্ষিক প্রিয়জন, পাক্ষিক বিনোদন বিচিত্রা, চ্যানেল আইয়ের পাক্ষিক আনন্দ আলো, পাক্ষিক আনন্দ ভুবন পত্রিকায় নিয়মিত আমন্ত্রিত লেখক হিসেবে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি বিষয়ক কলাম ও প্রতিবেদন লেখেন।
সাংবাদিক হিসেবে তিনি দেশের চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রতিবেদকদের অধিকার আদায় ও চলচ্চিত্রের উন্নয়নে নিজেকে বিভিন্ন আন্দোলনে সম্পৃক্ত করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ২০০২-২০০৩ কার্যবর্ষে ‘ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক’পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফিল্ম জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন ১৯৯২ সালের ৯ জানুয়ারি মৌসুমী হোসেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির মো. শাহবাজ হোসেন মুন ও অপরাজিতা হোসেন মীম নামে দুই সন্তান রয়েছে। ছেলে ও মেয়ে দুজনেই বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে পড়ছেন।
আওলাদ হোসেন দেশের চলচ্চিত্রের অনেক ইতিহাস ও ঘটনার সাক্ষী। তিনি নবীন বিনোদন সাংবাদিকদের কাছে বটবৃক্ষের মতো।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৫
এসও/কেবিএন