বাঙালির হাজার বছরের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিলেতে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের পাশাপাশি অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছর টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল আয়োজন করে মাসব্যাপী ‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’। গত ২৯ নভেম্বর উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী যুক্তরাজ্য সংসদের অষ্টম প্রযোজনা ‘ইঁদারা’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিলেতে বাংলা নাটকের সবচেয়ে বড় এই উৎসবের ১৩তম আসর।
উৎসবের শেষ দিন বৈরি আবহাওয়া মাড়িয়ে ব্রাডি আর্ট সেন্টার মিলনায়তন পূর্ণ করে তোলেন ভিন্ন ভাষাভাষির দর্শক। চল্লিশের দশকে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার ঘুণে ধরা বৈষম্যপূর্ণ সমাজের চিত্র নিয়ে নাটকটি লিখেছেন নাট্যকার মান্নান হীরা। বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় আগ্রাসনে বিপন্ন আজ মানবতা। ধর্ম বৈষম্যের বেড়াজাল থেকে বাদ যায় না নিষ্পাপ শিশুও। উগ্র ধর্মান্ধ মানুষদের মাঝে রক্তের হোলি খেলা নিয়েই ‘ইঁদারা’। নাট্যোৎসবের সমাপনী পর্বে আয়োজন সহযোগীসহ উপস্থিত দর্শকদের সাধুবাদ পায় উদীচীর নাটক বিভাগ। প্রশংসা কুড়ায় সময়োপযোগী এমন গল্প মঞ্চায়নের জন্য।
নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন উজ্জ্বল দাশ। তিনি এতে অভিনয়ও করেছেন। এ ছাড়াও আছেন নুরুল ইসলাম, অসীম চক্রবর্তী, জুয়েল রাজ, ফিরোজ আলী, নজরুল ইসলাম, সামসুদ্দীন, শাহ রাসেল, মুসলেহ জাহিন এনামুল, প্রশান্ত দাশ সুশান্ত প্রমুখ। শাগুফতা শারমিন তানিয়ার পোশাক পরিকল্পনা ও মঞ্চসজ্জা আর প্রযোজনাটির সমন্বয়কারী ছিলেন অসীম চক্রবর্তী।
দর্শকদের সঙ্গে মঞ্চায়ন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় নাটকটির নির্দেশক উজ্জ্বল দাশ বলেন, “একদিকে বৈষম্যহীন পৃথিবী চায় শান্তিকামী মানুষ, অন্যদিকে উগ্র ধর্মান্ধগোষ্ঠী বিভেদের দেয়াল তৈরিতে মত্ত। চারপাশে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটলেও আমাদের মানস চৈতন্যের বিকাশ ঘটেনি। ‘ইঁদারা’র প্রেক্ষাপট আর আজকের পৃথিবীর এখানেই মিল!”
বাংলাদেশ সময় : ১১০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৫
জেএইচ