ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

জনি হক, কলকাতা থেকে

জমে উঠেছে বাংলাদেশ বিজয় উৎসব

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫
জমে উঠেছে বাংলাদেশ বিজয় উৎসব ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের আয়োজনে বাংলাদেশ বিজয় উৎসব জমে উঠেছে। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) উৎসবের দ্বিতীয় দিন বিপুল দর্শক সমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এবার বড় পরিসরে নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে হচ্ছে এটি।

বিকেলে শুরু হওয়া এদিনের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মানস ঘোষ ও উপেন তরফদার। তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে স্বাধীনতা সম্মাননা পদক দিয়েছে। কলকাতায় নিযুক্ত উপ-হাইকমিশনার জকি আহাদের সভাপতিত্বে আলোচনায় উপেন তরফদার বলেন, 'ভাষা থেকে শুরু করে স্বাধীনতা, সবকিছুই রক্ত দিয়ে অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এটা সারাবিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। '

মানস ঘোষ তার বক্তৃতার বলেন, 'যে আদর্শ নিয়ে অনেক ত্যাগে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে সেই চেতনাকে বাস্তবরূপ দিতে নতুন প্রজন্মকেও এগিয়ে আসতে হবে। '

এদিন সাংস্কৃতিক আয়োজনের শুরুতে তিনটি দেশাত্মবোধক গান গেয়ে শোনান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী। তারপর এসেছেন  নজরুলসংগীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা। তিনিও গেয়েছেন দেশের গান। এরপর তার প্রয়াত বাবা আবু হেনা মোস্তফা কামালের লেখা 'মাগো ওদের কোনো দোষ ছিলো না' গেয়ে শোনান তিনি। তার শেষ পরিবেশনা ছিলো 'এই পদ্মা এই মেঘনা'।

সুজিত মোস্তফার পর এলেন আধুনিক গানের শিল্পী   মৌটুসী পার্থ। দর্শক-শ্রোতা আগের দিনের চেয়ে বেশি হওয়ার দিকটি তুলে ধরলেন তিনি। তার কণ্ঠে শোনা গেছে খান আতাউর রহমানের সুর করা 'এ কি সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে'। এরপর তিনি গেয়ে শোনান 'মনপুরা' ছবির গান 'সোনার পালঙ্কে'।

এরপর আসেন নবীন শিল্পী সুপর্ণা ইসলাম। তিনি জানান, শখে গান করেন। এখানে গাওয়ার সুযোগ দেওয়ায় উপ-হাই কমিশনারকে ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি তিনি। সুপর্ণা গেয়েছেন 'ও আমার বাংলা মা তোর', 'আর কিছু চায় না মনে গান ছাড়া', 'মিলন হবে কতোদিনে'। তারপর শ্রোতা মাতান লোকগানের শিল্পী শফি মন্ডল। তার পরিবেশনা শেষে এদিন গান গেয়ে শোনানো শিল্পীদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন উপ-হাইকমিশনার।

সবশেষে সংগীত পরিবেশন করতে আসে রেনেসাঁ ব্যান্ড। এদিনের আকর্ষণ ছিলেন তারাই। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য নকিব খান বলেন, 'আজকের পরিবেশনার শুরুতে আমরা শ্রদ্ধা জানাতে চাই সেইসব শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাকে, যারা আমাদেরকে একটা দেশ, একটা মানচিত্র, একটা পতাকা দিয়েছেন। ' ব্যান্ডটি শুরুতে পরিবেশন করে 'জয় বাংলা বাংলার জয়'। এরপর একে একে তারা উপহার দেন গৌরিপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা 'শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবর', 'নোঙর তোলো তোলো', 'বাংলার হিন্দু বাংলার বুদ্ধ বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার মুসলমান'। এরপর জোয়ান বায়েজের 'বাংলাদেশ, বাংলাদেশ' শুনিয়ে 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ'-এ জর্জ হ্যারিসনের গাওয়া 'বাংলাদেশ' পরিবেশন করেন তারা। এরপর নিজেদের অপ্রকাশিত গান 'দেশটা কেনো দেবে' গেয়েছেন পিলু খান। এটা তারই সুর করা, লিখেছেন জুলফিকার রাসেল।

দেশাত্মবোধক গানের পর রেনেসাঁর প্রথম অ্যালবাম থেকে 'ও নদী রে', 'বৃষ্টির লেখা কবিতা', 'রানওয়ের মাটি ছুঁয়ে'সহ জনপ্রিয় আরও কিছু গান। তাদের গানের তালে আয়োজক ও দর্শকরা নেচেছেন, গলাও মিলিয়েছেন।

এদিকে সংগীতানুষ্ঠানের উল্টোদিকে ঢাকাই জামদানি, রাজশাহীর সিল্ক, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, বুটিক, প্লাস্টিক সামগ্রী, হস্তশিল্প প্রদর্শনীর ক্রেতা দেখা গেলো প্রচুর। বিভিন্ন বয়সী নারীরা দারুণ আগ্রহ নিয়ে এসেছিলেন এখানে। জামদানির স্টল বেশি, সেগুলোতেই মেয়েদের ভিড় বেশি। কলকাতায় বসে জামদানি কিনে ফেলার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না তারা।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) উৎসবের তৃতীয় দিনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আকর্ষণ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা। উপস্থাপিকা শান্তা জাহান সেকথা বেশ কয়েকবার বললেনও। সঙ্গে জানিয়ে রাখলেন তৃতীয় দিনের আয়োজন সাজিয়েছে তালাশ মিডিয়া অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট। রুনা ছাড়াও থাকছে দুই বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নচিকেতা, কুষ্টিয়ার লালন শিল্পীগোষ্ঠী, নজরুলসংগীত শিল্পী নাসিমা শাহীন এবং রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অনিমা রায়ের পরিবেশনা।

কলকাতা সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫
জেএইচ

** বিজয় দিবসের কাকভোরে কলকাতার পথে পথে
** নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামে এক টুকরো বাংলাদেশ
**কলকাতায় শুরু হলো বাংলাদেশ বিজয় উৎসব
** ‘মমতার অন্তরের একদিকে পশ্চিমবঙ্গ অন্যদিকে বাংলাদেশ’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।