শুক্রবার (৯ জুন) সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে গুলজার আরও বলেন, ‘ছবির প্রথমার্ধে দেশীয় কোনো শিল্পীকে দেখিনি। পাসিং শট থাকতে পারে।
গুলজার আরও বলেন, ‘ছবিটিতে পাগলের চরিত্রে নাদের চৌধুরীর উপস্থিতি সব মিলিয়ে ৩০ সেকেণ্ড। বাকি রইলো অমিত হাসান আর নুসরাত ফারিয়া। ফারিয়ার এন্ট্রি হয় বিরতির পর থেকে। ’
অমিত হাসান বা নুসরাত ফারিয়াকে ছাড়া দর্শক আর কাউকে চেনেন না। এ অবস্থায় অভিনয়শিল্পীদের সমতা রইলো কই— এমন প্রশ্ন রেখে গুলজার বলেন, ‘প্রিভিউ কমিটি কারো একার মতামতের ওপর নির্ভর করে না, সম্মিলিত সিদ্ধান্ত লাগে। এটা জাজের ভালো করেই জানা। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে দোষারোপ করা মূর্খতার সামিল বলেই মনে করি। ’
সম্প্রতি সেন্সর বোর্ডের প্রিভিউ কমিটি জিৎ, শুভশ্রী ও নুসরাত ফারিয়া অভিনীত ‘বস টু’কে যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি উল্লেখ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। প্রিভিউ কমিটিতে ছিলেন নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার। ‘বস টু’-এর বাংলাদেশ অংশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া অভিযোগ করছে যে, গুলজার ব্যক্তি আক্রোশের বশবর্তী হয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বিরোধিতা করছেন।
জাজ ‘বস টু’-এর ১৬জন দেশীয় শিল্পীর নাম উল্লেখ করে বলেছে, 'বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ এদের সবাইকে নাও চিনতে পারে । কিন্তু এদের তো গুলজার সাহেবের চেনার কথা ! তাহলে উনি কি চিনেও না চেনার ভান করেছে, জাজের প্রতিপক্ষের সাথে হাত মিলিয়ে। তাহলে তো উনি নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন । সেই ক্ষেত্রে সরকারের উচিত যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব উনাকে প্রিভিউ কমিটি থেকে সরিয়ে দেয়া। '
এ ব্যাপারে জাজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় লেখা অভিযোগ নজরে এসেছে গুলজারের।
কথা প্রসঙ্গে জাজ তথা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আবদুল আজিজের সমালোচনা করে গুলজার বলেন, ‘যৌথ প্রযোজনার নামে এভাবেই বিদেশি ছবি মুক্তি দেওয়ার রেওয়াজ চালু করছে জাজ। তাদের কিছু মেশিন রয়েছে বলে অন্যদের হল দেওয়া হয়না। বিশেষ করে উৎসবে দেশীয় ছবি মুক্তি দিতে দেয়না তারা। ’
এর আগে একই ঈদে যৌথ প্রযোজনার ‘বাদশা’ ও ‘শিকারি’ মুক্তির উদাহরণ দিয়ে গুলজার বলেন, ‘এবারও তারা দুটি ছবি মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনটিই এখনও সেন্সর পায়নি। এ কারণে এবারের ঈদে বড় বাজেটের ‘রাজনীতি’ বা ‘অহংকার’ হল পাচ্ছে না। এগুলো শাকিব খানের ছবি হওয়া সত্ত্বেও হল পাচ্ছে না। অন্যদিকে মালেক আফসারীর ‘অন্তর জ্বালা’রও একই দশা। অবস্থাটা এমন হয়েছে যে, দেশীয় ছবি আর কোনো ঈদে বা উৎসবে মুক্তি পাবেনা, এ রকমই একটি পলিসি বা সিস্টেম করে রেখেছে জাজ। এসব কারণে দেশের শিল্পী-কুশলীরা রাস্তায় বসছে। তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ’
গুলজার জানান, ভুক্তভোগী ১৪টি সংগঠনের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা ভঙ্গের আশঙ্কা করে তারা এ ছবিগুলোর মুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করেছে প্রিভিউ কমিটির কাছে।
প্রিভিউ কমিটির প্রশংসা করে আলোচিত এই পরিচালক নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি প্রিভিউ কমিটি যৌথ প্রযোজনার ছবির ব্যাপারে এই প্রথমবার সাহসি ভূমিকা নিতে পারলো। ’
এর আগে কি কমিটি নমনীয় ছিলো? এমন প্রশ্নের জবাবে গুলজার বলেন, ‘ঠিক তা নয়। তবে জাজের অনেক কিছুই ছাড় দেওয়া হয়েছিলো। ভবিষ্যতে অনিয়ম হবেনা বলেও তারা কয়েকবার অঙ্গীকার করেছিলো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৭
এসও