এশিয়ার বৃহত্তম এই ইসলামী প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের ইসলামভিত্তিক মতামত বা ফতোয়া প্রকাশ করেন। এবার তাদের ফতোয়ার মুখে পড়েছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান।
এ প্রসঙ্গে টুইটার পোস্টে নুসরাত লিখেছেন, আমি অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করি। এই ভারত সকল প্রকার জাতি, বর্ণ ও ধর্মীয় সীমার উর্ধ্বে। আমি সকল ধর্মকেই শ্রদ্ধা করি। আমি এখনো একজন মুসলিম। আর আমি কি পোশাক পরব সেটা সম্পূর্ণই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার, সে বিষয়ে অন্যের মন্তব্য করা অবাঞ্ছিত। আমি মনে করি, বেশভূষার চেয়ে ধর্মবিশ্বাস অনেক উর্ধ্বে।
তিনি আরও লিখেছেন, যেকোন ধর্মের কট্টর মৌলবাদীদের মন্তব্যে মনোযোগ দিলে তা কেবলমাত্র ঘৃণা আর সহিংসতারই জন্ম দেয়। ইতিহাস এর সাক্ষ্য বহন করে।
লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকেট পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট আসন থেকে নির্বাচিত হন নুসরাত। এরপর গত ১৯ জুন তুরস্কের বোদরুমে জাঁকজমকভাবে বিয়ে করেন কলকাতার সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নিখিল জৈনকে। ২৫ জুন লোকসভায় শপথ গ্রহণের দিন নববধূ নুসরাতের সিঁথিতে সিদুঁর, গলায় মঙ্গলসূত্র, হাতে মেহেদি ও কপালে টিপ দেখা যায়। সংসদে তার নাম লেখেন নুসরাত জাহান রুহি জৈন। শপথ শেষে ‘বন্দে মাতরম’ ও ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করেছেন এবং মাননীয় স্পিকারকে প্রণাম করেছেন। এ নিয়ে চটেছেন দেওবন্দের ধর্মীয় নেতারা।
এর জের ধরে কাসমী অভিযোগ করে বলেন, মুসলিম হিসেবে সিঁদুর ও মঙ্গলসূত্র পরা উচিত হয়নি নুসরাতের। ইসলামে এগুলো ‘হারাম’। তাছাড়া একজন অমুসলিম (হিন্দু) ছেলেকে বিয়ে করাও উচিত হয়নি। নুসরাতের উচিত ছিল একজন মুসলমানকে বিয়ে করা।
মুফতি আসাদ কাসমী ফতোয়া দিয়ে আরও বলেন, ইসলাম মতে অমুসলিম কাউকে বিয়ে করার কোনও অধিকার নেই মুসলিম মেয়েদের। ইসলাম এটা সমর্থন করে না। হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিয়ের পরে সিঁদুর, মঙ্গলসূত্র পরে নুসরাত ইসলাম ধর্মকে অমর্যাদা করেছেন। এটা ইসলাম ধর্ম ও সংস্কৃতিকে অপমান।
তবে মুফতি কাসমী নিজেই তার অভিযোগকে শিথিল করে বলেন, আমি জানি নুসরাত একজন অভিনেত্রী। অভিনয় জগতের মানুষেরা ধর্ম বিষয়ে ধরাবাঁধা নিয়ম মানেন না। তাদের কাছে যা করা সঠিক মনে হয়, তাই করেন। এজন্য নিজের দায়িত্ববোধ থেকে আমি শুধু তাকে শরিয়তের বার্তা পৌছে দিলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
ওএফবি