ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘মানুষ যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন স্বপ্ন দেখবে’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৯
‘মানুষ যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন স্বপ্ন দেখবে’

রাজশাহী: প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত গবেষক ও গণসঙ্গীতশিল্পী শুভেন্দু মাইতি বলেছেন, ‘স্বপ্ন হলো বটের বীজের মতো। ছোটবেলায় রাস্তায় বটের ফল পড়ে থাকতে দেখতাম। মা বলতেন, বটের ফল ভেঙে দেখিস। ফলটা ভাঙলেই ভেতরে হাজার হাজার বীজ। সে বীজ যখন কোনো আশ্রয় পায়, পাহাড় কিংবা কোনো মন্দিরের গায়ে, সে বিশ্ব বিদীর্ণ করতে পারে। মানুষের স্বপ্ন ঠিক তেমনই। স্বপ্নকে আশ্রয় দিতে হবে। আশ্রয় পেলেই স্বপ্ন বাঁচবে। মানুষ যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন স্বপ্ন দেখবে।’

‘গল্পে গানে শুভেন্দু মাইতির সঙ্গে বাংলা গানের পরম্পরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলা লোকগানের কাণ্ডারী। সঙ্গীত বিষয়ক এ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কৃষ্টি ফাউন্ডেশন।

 

বুধবার (৩১ জুলাই) রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দু’টি অধিবেশনে এই অনুষ্ঠান চলে। প্রথম অধিবেশন বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এ অধিবেশনে সঙ্গীতগুরু শুভেন্দু মাইতি সঙ্গীতপ্রেমীদের সঙ্গে সঙ্গীত বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি সঙ্গীতের বিভিন্ন দিক ও কলা-কৌশল সম্পর্কেও কথা বলেন তিনি।  ‘গল্পে গানে শুভেন্দু মাইতির সঙ্গে বাংলা গানের পরম্পরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানসঙ্গীতে সুর ও স্বর প্রক্ষেপণ, মাইক্রোফোনের ব্যবহার, সংবেদনশীল ও মঞ্চের দক্ষ গায়কী অর্জনের কৌশল শেখান তরুণ-তরুণীদের। এছাড়া লোক সংস্কৃতি সংরক্ষণে নাগরিক সমাজের ভূমিকা প্রসঙ্গে আলোচনা করেন এই সঙ্গীতগুরু।

অনুষ্ঠানে শুভেন্দু মাইতি বলেন, ‘মানুষ পৃথিবীতে কেবল মরার জন্য জন্ম নেয়নি। জন্ম ও মৃত্যুর মাঝে মাঝে মানুষের অনেক কিছু করার আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সে বিশ্বাসই আমাদের আলো। ’

আলোচনার এক পর্যায়ে শুভেন্দু মাইতি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে ৩২ কোটি বাঙালি বাস করে। যে জনগোষ্ঠী বুদ্ধিদীপ্ত, দেশপ্রেম, সৃজনশীলতা, সহনশীলতা সব মিলিয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি। মহৎ সব গুণাবলী থাকার পরও বিচ্ছিন্নতার কারণে ম্রিয়মান হয়ে পড়েছে। তোমাদের সন্তানদের ইংরেজিতে পড়াও ঠিক আছে। সে ইংরেজিতে লিখতে-পড়তে শিখছে ভালো, তবে অন্তত তাকে বাংলা ভাষাটাও বলা শেখাও। আর ভুলে বাবার গায়ে পা লেগে গেলে নিচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা শেখাও। এটুকু রক্ষা হলেই দেখবে আমাদের সংস্কৃতি রক্ষা হয়ে গেছে। ’

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টায় থেকে। এটি চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের সহধর্মিণী মাসতুরা খানম দুই বাংলার বরেণ্য এই সঙ্গীতগুরুকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করেন।

এর পর শুভেন্দু মাইতির নিজের লেখা ও সুর করা  ‘স্বপ্ন দেখার সাহস কর, স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচে নাকি...’ গানটি সমবেতভাবে পরিবেশন করেন তার গলায় সদ্য দীক্ষা নেওয়া রাজশাহীর তরুণ শিল্পীরা। গান শেষে মিলনায়তনে থাকা দর্শক শ্রোতারা তাদের মুহুর্মুহু তালির ভাষা দিয়ে গুণী এই গণসঙ্গীত শিল্পীর কথা ও সুরকে প্রীতিসম্ভাষণ জানান।  

এ অধিবেশনে একক পরিবেশনের সঙ্গীতানুষ্ঠানে মূর্ছনা ছড়াবেন সুরের জাদুকর শুভেন্দু মাইতি।  

আয়োজনে উপস্থিত আছেন কৃষ্টি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত কবীর, অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক সুপ্রভা জুই প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
এসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।