বাংলানিউজ: ঈদে আপনার কাজ সম্পর্কে বলুন।
সরদার রোকন: এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি করে টেলিফিল্ম ও এক ঘণ্টার নাটক যাবে টেলিভিশনে।
বাংলানিউজ: বর্তমান সময়ে অনেক কাজ করছেন। নিজেকে কীভাবে দেখেন?
সরদার রোকন: আমি সফল হওয়ার চেষ্টা করছি মাত্র । নিজেকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। শুরুর সরদার রোকন আর বর্তমান সরদার রোকনকে আমি কাজ দিয়ে পার্থক্য করি। আমার মনে হয় আমি সফলতার দিকে যাচ্ছি।
বাংলানিউজ: আপনার কাজ দর্শক দেখবেন কেন? আপনার কাজের বিশেষত্ব কী?
সরদার রোকন: আমি দর্শদের জন্যেই নাটক বানাই। আমার প্রত্যেকটি কাজে আলাদা আলাদা স্বাদ থাকে, নতুনত্ব থাকে। আমার নাটকগুলোতে কোনো না কোনো বার্তা থাকে, এটাই আমার বিশেষত্ব আর এজন্যই দর্শক আমার নাটক দেখবেন।
বাংলানিউজ: গায়ক বা অভিনেতা না হয়ে আপনি পরিচালক হলেন কেন?
সরদার রোকন: আমি শুরুর দিকে মঞ্চে নির্দেশনা দিতাম। তথন থেকেই ভাবতাম আমি পরিচালনায় আসবো। এসেছিও। গান বা অভিনয় করার ইচ্ছা আমার কখনোই ছিল না।
বাংলানিউজ: পরিচালক হওয়ার অনু্প্রেরণা কে?
সরদার রোকন: প্রথমত আমার পরিবার, তারপর আমার গুরু নাট্যভিনেতা ও নির্মাতা শহীদুজ্জামান সেলিম।
বাংলানিউজ: শহীদুজ্জামান সেলিমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা?
সরদার রোকন: দীর্ঘ ১১ বছর সহকারী পরিচালক হিসেবে ওনার সঙ্গে কাজ করেছি । তিনি আমাকে হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছেন।
বাংলানিউজ: চলচিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা আছে কী?
সরদার রোকন: হ্যাঁ, অবশ্যই। একজন নির্মাতার স্বপ্নই থাকে চলচিত্র নির্মাণ করা। আমাদের নাটকের পরিচালকরা যেসব সিনেমা বানাচ্ছে সেগুলা বেশ হিট হচ্ছে। সিনেমা অনেক বড় প্লাটফর্ম, তাই ভালো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে চাই।
বাংলানিউজ: বেশিরভাগ নির্মাতা অভিযোগ করেন নাটক নির্মাণে বাজেটের স্বল্পতা রয়েছে। আপনার মতামত কী?
সরদার রোকন: বাংলাদেশে নাটক নির্মাণে বাজেটের স্বল্পতা খুবই ভয়াবহ। বাজেট এত কম যে দুই-তিনজন শিল্পীই বেশিরভাগ টাকা নিয়ে যায় । কিন্তু আমি সেই শিল্পীদের দোষ দিচ্ছি না। তাদের চাহিদা আছে বলেই তারা টাকা নিচ্ছে। চ্যানেল যখন বলে দেয় অমুক শিল্পীকে নেন, তমুক শিল্পীকে নেন তখন সেই শিল্পী যদি দ্বিগুণ টাকাও চায় তাদের আমরা তাই দিতে বাধ্য। কারণ চ্যানেল আমাদের হাত বেঁধে দিচ্ছে। আমার মনে হয় ইউটিউব যেহেতু একটা বড় প্লাটফর্ম । সেখানে নাটক থেকে চ্যানেলগুলো অনেক টাকা আয় করছে। সেক্ষেত্রে ইউটিউবের আয়ের একটা অংশ যদি পরিচালক-প্রযোজকদের দেওয়া হয় তাহলে কাজের মান এবং বাজেট আরও বাড়বে বলে আমি মনে করি।
বাংলানিউজ: পরিচালকরা শিল্পী তৈরির কারিগর। যখন চ্যানেল শিল্পীর নাম ঠিক করে দিচ্ছে তখন পরিচালকদের নতুন শিল্পী তৈরির সুয়োগ কতটুকু থাকে?
সরদার রোকন: একদমই না। আমার মনে হয় না গত পাঁচ-ছয় বছরে ভালো কোন শিল্পী তৈরি হয়েছে। এই কয়েক বছরে মিডিয়া কয়েকজন শিল্পীর কাছে জিম্মি হয়ে আছে । নতুন শিল্পীতো নাই বরং যারা পুরাতন প্রতিভাবান শিল্পী আছেন তারাও চ্যানেল এবং এজেন্সির কারণে সুয়োগ পাচ্ছেন না।
বাংলানিউজ: তাহলে নতুন যারা অভিনয়ে আসতে চাচ্ছে তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
সরদার রোকন: যদিও মজা করে বলা আমার মনে হয় এখন নতুনদের অভিনয়ের চেয়ে ফ্যান-ফলোয়ার বাড়ানো উচিত। কারণ ফ্যান-ফলোয়ার থাকলে কাজ পাওয়া যায়। অনেক পরীক্ষিত অভিনয়শিল্পীদের ফ্যান-ফলোয়ার না থাকায় আজকাল কাজ পায় না। বিষয়টা আমাদের শিল্পের জন্য হতাশার। তবে আমি নতুনদের বলবো আগ্রহ না হারিয়ে অভিনয়টা শিখতে হবে।
বাংলানিউজ: আপনি তো অনেক শিল্পীকে নিয়ে কাজ করেছেন। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের শিল্পীদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা কেমন?
সরদার রোকন: কিছু কিছু শিল্পী বাদে আমার মনে হয় না কারও কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। কিছু শিল্পী খুবই পেশাদার । তারা সঠিক সময়ে সেটে আসবে। কোনো রকম প্যারা না দিয়ে তাদের কাজটা করে যাবে। আর বেশির ভাগ শিল্পীই শুধু টাকার জন্য অভিনয় করে। দিন গুনে টাকা নিয়ে যাবে এটাই তাদের পেশা।
বাংলানিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সরদার রোকন: আপনাকেও ধন্যবান। সেইসঙ্গে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য ঈদের শুভেচ্ছা রইলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৯
এমআরএ/এসএইচ/ওএফবি