জীবনের কোন এক পর্যায়ে প্রায় প্রত্যেক ভারতীয় নারীই লতা মঙ্গেশকরের মতো একজন শিল্পী হতে ইচ্ছা করতে পারেন। কিন্তু সবাই লতা মঙ্গেশকর হতে পারেন না।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া রানু মণ্ডলকে নিয়ে চলছে তুমুল চর্চা। লতা মঙ্গেশকরের হুবহু অনুকরণ করে চমৎকারভাবে তিনি গেয়েছেন ‘এক পিয়ার কি নাগমা হ্যায়’। এই অবহেলিত মেধাকে বিকাশের সুযোগ দিয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী হিমেশ রেশমিয়া। তার আগামী সিনেমার জন্য দু’টি গান গাওয়ার সুযোগ দিয়েছেন রানু মণ্ডলকে। দু’টি গানের রেকর্ডিংও সম্পন্ন হয়েছে।
কিন্তু যার গান গেয়ে রানু মণ্ডল এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন, সেই কিংবদন্তি কী বলছেন তার সম্পর্কে? এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে এশিয়ার নাইটিঙ্গেল লতা মঙ্গেশকর খুশি মনেই বলেন, ‘যদি কেউ আমার নাম ও কর্ম থেকে কোনোপ্রকার উপকৃত হয় সেটা আমার জন্য সৌভাগ্যজনক। ’
‘কিন্তু আমি মনে করি, সাফল্যের জন্য কাউকে অনুকরণ করাটা নির্ভরযোগ্য এবং দীর্ঘস্থায়ী কোনো উপায় নয়। আমার গান, বা কিশোর কুমার, বা মোহাম্মদ রফি, বা মুকেশ ভাই, বা আশা ভোঁসলের গান গেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিল্পীরা ক্ষণিকের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। কিন্তু এটা টিকে থাকবে না,’ বলেন ৯০ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি।
টিভিতে তিনি অনেক রিয়েলিটি শো’তে মেধাবীদের গান গাইতে দেখেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এতো এতো শিশু আমার গান কতো সুন্দর করে গায়। কিন্তু সাফল্যের প্রথম প্রদর্শনীর পরে তাদের আর কতজনকে মনে রাখা হয়? আমি শুধু সুনিধি চৌহান আর শ্রেয়া ঘোষালকে চিনেছি। ’
উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিল্পীদের প্রতি লতা মঙ্গেশকরের উপদেশ, ‘মৌলিক হও। আমি ও আমার সহকর্মী শিল্পীদের চিরসবুজ গানগুলো গাও, ঠিক আছে। কিন্তু একটা সময় শিল্পীকে অবশ্যই তার নিজের মৌলিক গান খুঁজে পেতে হবে। ’
নিজের বোনের দৃষ্টান্ত দিয়ে লতা বলেন, ‘যদি আশা (ভোঁসলে) তার নিজস্ব গান না গাইতো, সে আমার ছায়াতেই চিরকাল থেকে যেত। একজন ব্যক্তির মেধাকে তার স্বাতন্ত্র্য কতদূর পর্যন্ত উপরে তুলতে পারে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ সে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৯
এমকেআর