‘চির অধরা’ দিয়েই ভক্তদের মনে ঠাঁই করে নেন এই শিল্পী। ২০১০ সালে বের হয় তার প্রথম অ্যালবাম ‘শুধু তোমাকে’।
এরপর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘দ্বিতীয়া’। আর ২০১৪ সালে দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘আদরের শুকতারা’। এরপর গেয়েছেন অনেক একক গান। গেয়েছেন নজরুল ও রবীন্দ্র সঙ্গীতও। তার সর্বশেষ প্রকাশিত গান ‘একটু ডিপ্রেশনে’।
ডিপ্রেশন নিয়ে গান কেন? মিফতাহ জামানের গানের অনুপ্রেরণা কী? সংগীত জীবনের সংগ্রাম, আর কিভাবেই বা ছিল এর পরিকল্পনা? ভক্তদের এমন বহু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শিল্পী মিফতাহ জামান।
সম্প্রতি এসব বিষয় নিয়েই এক সন্ধ্যায় মিফতাহ জামানের সঙ্গে আড্ডা হয় বাংলানিউজের। সেই আড্ডায় উঠে আসে তার অনেক অপ্রকাশিত কথাও। মিফতাহ জামানের সঙ্গে কথা বলেছেন- নিউজরুম এডিটর সাদী মুহাম্মাদ আলোক।
বাংলানিউজ: ডিপ্রেশন নিয়ে গান কেন?
মিফতাহ জামান: আসলে ডিপ্রেশন থেকেই ডিপ্রেশনের গান। আমি একা তো না, আমরা সবাই ডিপ্রেশনে পড়ি। তো হঠাৎ এক বিকেলে অকারণে কেন যেন মন খারাপ হলো। তখন আমার স্ত্রী এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী ব্যাপার মন খারাপ কেন?’ আমি বললাম, ‘থাকুক! এমনিতেই। কোনো কারণ নেই। ’ আসলেই সেদিন কোনো কারণ ছিল না। তো এমন অকারণে মন খারাপ তো হয় আমাদের সবারই। সেই থেকেই আসলে দুম করে মাথায় কথাগুলো চলে আসলো। আর লিখে ফেললাম ডিপ্রেশনের গান। যদিও আমি গান লিখি না। মানে আমি চাইলেও সেটা পারা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু এ গানের ক্ষেত্রে এক দমই ভিন্ন। হঠাৎই কোথা থেকে যেনো কথাগুলোও চলে আসলো। এসেছে সুরও।
বাংলানিউজ: আপনি সুর করেন গান, কিন্তু লেখেন না। মানে অন্যের লেখা গানে সুর দেওয়া ও গাওয়া? গানের কথাগুলো বোঝা-এসব বিষয়ে ঝামেলা মনে করেন কী?
মিফতাহ জামান: হ্যাঁ, সত্যি বলতে এক্ষেত্রে ঝামেলা হয়। প্রথম ডিফিকাল্টি যিনি কথাগুলো লিখেন তাকে বোঝা। তিনি কী চিন্তা করে আমার জন্যে কতটুকু লিখলো। তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন। সেটা বুঝে নিয়েই সেই ইমোশনটা নিজের ভেতরে নেওয়া। তবে দীর্ঘ সময় ধরেই আমি বন্ধু তুষার হাসানের সঙ্গে কাজ করছি। তার সঙ্গে আমার কেমিস্ট্রিটা অনেক শক্ত। তবুও মাঝে-মধ্যে যে ঝামেলা হয় না তা নয়। সেট হয়।
এরপর যেটা হয়, আমি আসলে গানের কথা ওপর ভিত্তি করেই কাজ করি। তো অনেক সময় গানের কথায় যদি আমি ইমোশন না পাই, ওই ফিলটা না পাই, সেক্ষেত্রে আমি ওই গান নিয়ে কাজ করতে পারি না। আবার অনেক ক্ষেত্রে হয়তো যিনি লিখেছেন তিনি বোঝাতে পেরেছেন, কিন্তু আমি ফিলটা করতে পারছি না। সেক্ষেত্রেও ওই গানগুলো বাদ দিতে হয়। এমন অনেক লিরিক্স আছে যেগুলো এখনও আছে। কিন্তু গাইনি। বাদ দিতে হয়েছে।
বাংলানিউজ: আপনার জন্য গানগুলো লিখছেন কারা?
মিফতাহ জামান: আমার বেশিরভাগ গানই বন্ধু তুষার হাসানের লেখা। পাশাপাশি বন্ধু ফয়সাল আহমেদ, ইমতিয়াজ খানের লেখা গানও গেয়েছি। রাব্বি হাসান নামে এক ছোট ভাইয়ের লেখা গানও গেয়েছি। এছাড়া সোমেশ্বর অলির লেখা গানও আমি গেয়েছি। উনারা সবাই খুব ভালো লেখেন। এবং তাদের সঙ্গে আমার কেমিস্ট্রিটাও জমে।
বাংলানিউজ: শৈশবে শুরুতে আপনি রবীন্দ্র সঙ্গীত দিয়ে গানের চর্চা শুরু করেন। পরবর্তীতে গেলেন নজরুল সঙ্গীতে। এটা কীভাবে?
মিফতাহ জামান: আসলে গানের শিক্ষক পরিবর্তন হওয়ার কারণেই আমার চর্চার ধারা বদলে গিয়েছিল। রবীন্দ্র থেকে নজরুলে। এরপর তো ধীরে ধীরে মৌলিক সঙ্গীত থেকে গেলাম উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে। এভাবেই এগিয়েছি।
এছাড়া বাবা-মা যদিও রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা করতেন, তবে আমার ভেতর নজরুল সঙ্গীতের মৌহ জাগাতে বাবাও ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি সব সময় বাসায় পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর গান ছেড়ে রাখতেন। তো তখন খুব বিরক্ত হতাম। কিন্তু ওইটাই আসলে ধীরে ধীরে আমাকে আমি করে ফেলেছে। সুরের খেলাটা আমার ভেতরে ঢুকে গেছে তার গান শুনেই। গাইতে গিয়ে দেখলাম আমিও ওই রকমই গাইছি। এছাড়া ভীমসেন যোশী, মেহেদি হাসান। সবাই আমার ভেতরে ঢুকে গেছে।
সত্যি বলতে আমার গানের জীবনের একটা দীর্ঘ সময় গেছে কপি করতে করতে। অর্থাৎ আমি তাদের গান পুরো কপি করে গাইতাম। তারা যেখানে যেভাবে গাইছেন, আমি ঠিক সেখানে সেভাবে তাদের মতো গাওয়া। যদিও তাদের মতো সম্ভব তো নয়। তবে আমি চেষ্টা করতাম। তাদের মতো একই ইমোশন। গায়কি।
আসলে একটা সত্যি কথা বলি যেটা আমার মনে হয়, সবার প্রতিই শ্রদ্ধা রেখে বলছি- এখন যারা নজরুল সঙ্গীত গান, তারা শুধু পারফেকশন নিয়েই ভাবেন। কিন্তু ইমোশনটা কেন যেন পাই না।
বাংলানিউজ: দীর্ঘ সময় আপনি ওই শিল্পীদের গান তাদের মতো করে গাইতে চাইতেন, পরে যখন আপনার নিজের গান করতে গেলেন, তখন তাদের ধারা চলে আসতো কী?
মিফতাহ জামান: হ্যাঁ, এসেছে তো। এখনও আসছে। আমার গানগুলোর অনেক জায়গাতেই তাদের থেকে শেখা স্টাইলগুলো কাজে লাগিয়েছি। যেমন: একটা গানের অন্তরাতেই কিংবা একই লাইনেই দুইবার দুইরকম কাজ দেওয়া। এটার হয়তো প্রয়োজন নেই। কিন্তু আলাদা একটা অনুভূতি তৈরি করে। এটাতো তাদের কাছ থেকেই শেখা। বিশেষ করে পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী।
বাংলানিউজ: কোনো গান যখন আপনি সুর করেন, সেক্ষেত্রে কী প্রাধান্য দেন। যদি বলেন…
মিফতাহ জামান: গানের কথা। প্রথমেই গানের কথাগুলো নিয়ে ভাবি। কথাগুলো কী বলছে, পুরোটা বোঝা। ইমোশনটা নিজের ভেতর নেওয়া। ওই চিত্রটা বোঝা। এরপর ভাবি সুর। কোথায়, কীভাবে, কী কাজ হবে, কোথায় ইমোশনটা কেমন হবে। এরপর আসে গায়কি। মোদ্দা কথা হচ্ছে কথা, সুর, গায়কি- এই তিনটিই আমার প্রাধান্য। তবে ব্যতিক্রমও আছে।
বাংলানিউজ: ব্যতিক্রম কী?
মিফতাহ জামান: ‘অতঃপর’ শিরোনামে একটি গান আছে। সেটির ক্ষেত্রে পুরো উল্টো ব্যাপার হয়েছে। এই গানের পুরো মিউজিক শেষ। এরপর সুরও তৈরি। কিন্তু কথা তখনও তৈরি হয়নি। এরপর আমি তুষার হাসানকে ধারণা দিলাম যে আমি কী চাচ্ছি। পুরো চিত্র ওকে বোঝাতে চাইলাম। পরে তুষার অসাধারণ কাজ করেছে। ওর লেখার সেন্স অসাধারণ। আমি কনসেপ্ট দিলাম। তা থেকে তুষার অসাধারণ করে লেখলো। একদম আমি যা চাইলাম, ঠিক তাই ও লিখে ফেলল। লেখার পর তো আমি ওকে জড়িয়ে ধরি। ঠিক যেন আমার মনের কথাই লিখে ফেলেছে ও।
বাংলানিউজ: আপনি তো সুরও করেন, নিজেই গেয়েও থাকেন। কিন্তু যদি একটি বেছে নিতে হয় আপনাকে? গাইবেন নাকি সুর করবেন?
মিফতাহ জামান: যদি একটা নিতে হয় তাহলে অবশ্যই গাইতে চাইবো। মানে যদি একটাই নিতে হয়, তাহলে। আসলে গানের ক্ষেত্রে গাওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করে। অনেকের ভিন্ন মত থাকতে পারে।
তবে আমি আসলে দু’টোই করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। দু’টিই করতে চাই।
বাংলানিউজ: অন্য কারো সুরে গেয়েছেন কী?
মিফতাহ জামান: হ্যাঁ, গেয়েছি তো। সাজিদ সরকারের সুরে গেয়েছি। সন্ধির সুরে গেয়েছি। পার্থ দা’র (পার্থ বড়ুয়া) অ্যারেঞ্জমেন্টে গেয়েছি।
বাংলানিউজ: অন্যের সুরে গাইতে কোনো ঝামেলা মনে হয় কী?
মিফতাহ জামান: সত্যি কথা বলতে আমার কোনো ঝামেলা হয়নি। আসলে এক্ষেত্রে যাদের সঙ্গে কাজ করছি তারা কতটুকু স্বাধীনতা দিচ্ছে সেটা ইম্পরট্যান্ট। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তারা আমাকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমি কৃতজ্ঞ।
বাংলানিউজ: ‘চির অধরা’ আর ‘অতঃপর চির অধরা’ এই দু’টো গান…
মিফতাহ জামান: আসলে অনেকে হয়তো ‘অতঃপর চির অধরা’কে ‘চির অধরা’র দ্বিতীয় ভার্সন ভাবে। কিন্তু একদমই তা নয়। হ্যাঁ, দুটো গানের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। একটির সঙ্গে অন্যটির ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটির প্রেক্ষাপটের সঙ্গে অন্যটিরে প্রেক্ষাপটের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়টি প্রথমটির ‘ভার্সন-২ নয়’।
বাংলানিউজ: সঙ্গীতে আপনার অনুপ্রেরণা?
মিফতাহ জামান: গাওয়ার দিক থেকে আমার মূল প্রেরণা পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী। এছাড়া ভীমসেন যোশী, মেহেদি হাসান উনারাও রয়েছেন। যদি গানের কথার দিক দিয়ে বলি, তাহলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মানে উনার লেখা এত শক্তিশালী, এত গভীরত্ব। সুরের দিক বিবেচনাতেও অজয় চক্রবর্তী। পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন কিছু ইনফ্লুয়েন্সও রয়েছে। যেমন: মাইকেল জ্যাকসন, স্করপিয়ন্স, গানস অ্যান্ড রোজেস। এছাড়া ভারতেরও কিছু গান রয়েছে, সেগুলো থেকেও অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এইসব মিলিয়েই নিজের একটা জগত তৈরি হয়ে গেছে।
আসলে কম্পোজিশনের ক্ষেত্রে এখনও আমার ৮০-৯০ দশকের গানগুলোই ভালো লাগে। আমার মনে হয়, পুরো পৃথিবীতেই ৭০-৯০ দশকের গানগুলো একটু আলাদা ছিল। ওইটাই স্বর্ণযুগ। ওই সময়কার গানগুলোর আলাদা একটা বিশেষত্ব আছে। ওইগুলোই এখনও আমাকে টানে।
বাংলানিউজ: বাংলা গানে আপনার পছন্দের শিল্পী কারা? মানে ঠিক অনুপ্রেরণা নয়, কিন্তু আপনি যাদের গায়কি, সুর, কম্পোজিশন পছন্দ করেন?
মিফতাহ জামান: এমন অনেকেই আছেন। যেমন: বাপ্পা দা (বাপ্পা মজুমদার)। অর্নব দা’র কিছু কিছু গানও ভালো লাগে। উনার স্টাইল ইউনিক। এছাড়া মাইলসের গানও ভালো লাগে। বড় হয়ে বুঝেছি আরেকটা ব্যান্ডের কম্পোজিশন উপভোগ করতাম। সেটি হলো- আর্ক। এছাড়া সমসাময়িক যারা গান তাদের মধ্যে নন্দিতা, প্রিয়াংকা উনাদের গান ভালোই লাগে।
অন্যদিকে ওপারে (কলকাতায়)- অনুপমের গান ভালো লাগে। এছাড়া চন্দ্রবিন্দুর গানের কথা ভীষণ ভালো লাগে। আর শ্রেয়া ঘোষাল তো অসাধারণ গায়। উনার গায়কি ভালো লাগে। আপাতত এই কয়জনের নামই মনে পড়ছে।
বাংলানিউজ: আপনি তো অন্য প্রফেশনে আছেন। গান আপনার প্যাশন। এক্ষেত্রে প্রফেশন, প্যাশন, ফ্যামিলি- এগুলোর একটির সঙ্গে অন্যটি ক্ল্যাশ করে না?
মিফতাহ জামান: আসলে আমার ফ্যামিলি সব সময়ই সাপোর্টিভ। ছোটবেলা থেকে বাবা-মা সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। আর বিয়ের পর থেকে আমার স্ত্রী-ও আমায় যথেষ্ট সাপোর্ট দিচ্ছেন। তো এক্ষেত্রে আমি খুব ভাগ্যবান।
তবে আগে যখন আমি কনসালটেন্ট হিসেবে চাকরি করতাম, তখন খুব ক্ল্যাশ করতো। সারাদিন কাজ করে এসে রাতে গান তৈরি করার এনার্জি থাকতো না। এছাড়া দিনে যেহেতু অফিসে থাকতে হতো, কোনো সুর মাথায় এলে কিছু করার থাকতো না। এভাবে কত সুর হারিয়ে গেছে। কিন্তু এখন নিজেরই কনসালটিং ফার্ম থাকাতে ওই স্বাধীনতাটুকু পাই। যদিও নিজের ফার্ম হওয়ায় আলাদা চিন্তা থাকে। তবে যাই হোক গানের ক্ষেত্রে আগের থেকে বেশি সুবিধা পাই।
বাংলানিউজ: শুধু মিউজিক নিয়েই থাকলে আরও ভালো কিছু দিতে পারতেন বলে মনে করেন কী?
মিফতাহ জামান: হয়তো পারতাম। হয়তো না। আসলে মিউজিক করে আমাদের দেশে আয় কত? এখন গান করে তেমন তো আয় নেই। গায়কদের আয় আসে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করলে। সেটাও কতদিন? তাই অন্য একটা প্রফেশনে থাকা ভালো। সেটির পাশাপাশি মিউজিক করাটাই ব্যাটার। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা থাকে। মিউজিক করে পয়সা পাওয়ার ওপর নির্ভর থাকতে হয় না। সেক্ষেত্রে গানটাও ভালোভাবে গাওয়া যায়। পকেটে টাকা না থাকলে তো ভালো গান করা যায় না।
বাংলানিউজ: তাহলে নতুনদের কী বলবেন? গানকে পেশা হিসেবে না নিতে?
মিফতাহ জামান: গানটাকে প্রফেশন হিসেবে না নিতেই বলবো। সেটা প্যাশন হিসেবেই থাক। গান থেকেই আয় নির্ভর না হওয়াই উচিৎ। তাহলে স্বাধীনভাবে গানটা করা যাবে। কাজটাও ভালো হবে।
বাংলানিউজ: আমাদের এখনকার গানের ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা নিয়ে আপনার মতামত কী?
মিফতাহ জামান: আগে ইন্ডাস্ট্রির যারা শিল্পীদের গানগুলো নিয়ে বিজনেসটা লিড করতো, তাদের অনেকেরই সঙ্গীতের ওপর তেমন কোনো ধারণা ছিল না। যেটা খুব হতাশার ব্যাপার ছিল। তবে এখনকার চিত্র ভিন্ন। আমি বলবো, অবস্থা ভালো হচ্ছে। আসলে আমরা তো ট্রেন্ড ফলো করি। আমরা ভারতীয়, তারা ওয়েস্টার্ন-হলিউড।
এখন দেশের সিনেমায় ভালো গান যাচ্ছে। মানে স্ট্যান্ডার্ডটা হচ্ছে। ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি আশাবাদী। এছাড়া এখন অনলাইনেই সব। গান প্রকাশ থেকে শুরু করে প্রমোশন। এখন শিল্পীকে আর কারো পেছনে ঘুরতে হয় না। ফলে কষ্ট কমে গেছে। সুবিধা বেড়েছে। এখন সবার কাছেই সফটওফ্যার আছে। সবাই নিজের স্টুডিও দিতে পারছে। কতশত প্ল্যাটফর্ম আছে, ইউটিউব, ফেসবুক।
তবে এক্ষেত্রে মুশকিল হচ্ছে- ডেডিকেশন। এখনকার জেরানারেশনের যারা গাচ্ছেন সহজেই সব পাচ্ছেন বলে ডেডিকেশন, চর্চা কমে যাচ্ছে। ফলে স্কিল ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে না। সবাই শর্টকাট চাচ্ছে। অটো টিউনার দিয়ে সংক্ষেপে কাজ সেরে ফেলতে চায়। কিন্তু তাতে কাজের কাজ তো হচ্ছে না। রেওয়াজের রীতি উঠে যাচ্ছে। মানে গলাটাকে ঠিক করা। সেটাতো হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, আবার অনেক ভালো ভালো শিল্পী উঠেও আসছে।
আসলে সিরিয়াসলি কাজ করতে হবে। গানের কথার ওপর ফোকাস করা, গান নিয়ে স্ট্রাগল করা, বেশি বেশি কোয়ালিটি কাজ করা- এগুলো থাকতে হবে।
বাংলানিউজ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
মিফতাহ জামান: ভবিষ্যতে ভালো ভালো কাজ করে যেতে চাই। আর ইন্সট্রুমেন্টাল বের করতে চাই। এটা আমার খুব ইচ্ছে। পাশাপাশি রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত নিয়ে কাজ তো থাকবেই।
বাংলানিউজ: নতুনদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
মিফতাহ জামান: নতুনদের বলবো- সবার আগে চর্চা। বেশি বেশি চর্চা করতে হবে। কোনোরকমে সফটওয়্যার বা অটো টিউনার দিয়ে গান বের করা যায়, কিন্তু ভালো কাজ হয়না। তাই শর্টকাট না খুঁজে পরিশ্রম করে কোয়ালিটি কাজ করা। পাশাপাশি গানের কথার ওপরেও গুরুত্ব দেওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
এসএ/এমএ