দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে ক্যামেরায় নিজের যাদু দেখিয়েছেন প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান (৭০)। বহু নন্দিত পরিচালকের সঙ্গে ছিল তার সখ্যতা।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১২টা ২৬মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার মৃত্যুর খবরে চলচ্চিত্রাঙ্গন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
১৯৭২ সালে সিনেমায় মাহফুজুর রহমানের যাত্রা শুরু। সিনেমার সাদাকালোর যুগ থেকে শুরু করে রঙিন এবং ডিজিটালেও নিজের মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন এই কিংবদন্তি। আলমগীর কবির, আলমগীর কুমকুম, হুমায়ুন আহমেদ, শিবলি সাদিকসহ বাংলা সিনেমার প্রখ্যাত পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন গুণী এই মানুষটি। দশবার রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়েছেন।
মাহফুজুর রহমান খান ২৫ নভেম্বর হঠাৎ নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপরই তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) বাসায় ফিরছেন, তবে মরদেহ হয়ে।
৩ নভেম্বর মাহফুজুর রহমান খান শেষবার ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেদিন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) যুগল পরিচালক অপূর্ব-রানার ‘উন্মাদ’ সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নেন তিনি। তার সঙ্গে এই পরিচালকদ্বয়ের প্রথম কাজ ছিল এটি।
স্মৃতিচারণ করে কাবিরুল ইসলাম রানা বাংলানিউজকে বলেন, মাহফুজ ভাই অমায়িক একজন মানুষ ছিলেন। অনেক আগে থেকে তার সঙ্গে আমার কাজ করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সে সুযোগ প্রথমবারের মতো পেলাম ‘উন্মাদ’ সিনেমায়। কিন্তু বিধিবাম! কাজটা আর শেষ করা হলো না। মাহফুজ ভাই আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে রানা বলেন, নিঃসন্দেহে তিনি একজন বড় মাপের চিত্রগ্রাহক ছিলেন। তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অল্প কয়েকদিনে আমি অনেক কিছু শিখেছি। শুটিংয়ে কঠিন বিষয়গুলো তিনি খুব সুন্দর করে তুলে ধরতেন। তাকে হারানোর ক্ষতি অপূরণীয়।
‘উন্মাদ’ টিমের পক্ষ থেকে মাহফুজুর রহমান খানের জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে বলেও তিনি জানান।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর চকবাজারের শাহী মসজিদে মাহফুজুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বিএফডিসিতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে চিরশায়িত করা হবে আজিমপুর কবরস্থানে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৯
জেআইএম
আরও পড়ুন>> চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান আর নেই
আরও পড়ুন>>মাহফুজুর রহমানের জানাজা বিএফডিসিতে, আজিমপুরে দাফন