রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী মাধ্যম। মহান মুক্তিযুদ্ধ আবার হবে না। নতুন প্রজন্ম প্রত্যক্ষ করতে পারেনি, বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং তখনকার অবরুদ্ধ বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ কিভাবে দুর্বিষহ জীবন কাটিয়েছিল। কী অপরিসীম অত্যাচার নির্যাতন ভোগ করেছে, এটা তারা স্বচক্ষে দেখতে পারবেনা ও বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারবে না।
‘তবে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সেগুলো দেখে নতুন প্রজন্ম তা উপলব্ধি করতে পারবে। তারা মুক্তিযুদ্ধের যে আত্মত্যাগ ও গৌরবগাঁথা রয়েছে সেটা জানতে পারবে। একইভাবে সেদিন রাজাকার-আলবদর-আলশামস যুদ্ধ-অপরাধীরা কীভাবে বাঙালিদের উপর নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, ধর্ষণ চালিয়েছিল তাও জানতে পারবে,’ যোগ করেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, সেই ইতিহাস যাতে আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে না যায় এ উদ্দেশ্য নিয়ে এই চলচ্চিত্র উৎসব যারা আয়োজন করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজাকারদের তালিকা নতুন করে প্রণয়ন করবো না। যেটা সরকারের কাছে আছে সেটাই প্রকাশ হচ্ছে। অনেকেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছেন, যার ফলে শত শত টেলিফোন পাচ্ছি। জানতে চাচ্ছে কীভাবে কী করছি।
‘আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই। আমরা কোন তালিকা তৈরি করবো না। তৈরি করলে হয়তো কারো প্রতি অভিমান, আক্রোশ বা পক্ষপাতিত্বের কারণে কাউকে বাদ দেওয়া বা সংযুক্ত করার প্রচেষ্টা থাকতে পারে। তাই কোন কিছু না করে নির্মোহভাবে আগে থেকেই যা আছে তাই প্রকাশ করা হচ্ছে। যেটা সরকারি হেফাজতে আছে আর এটা প্রমাণিত হয়েছে ১৯৭১ সালে। আজকে কিছু প্রণীত হচ্ছে না তাই যারা যারা আতঙ্কিত হচ্ছেন তাদের বলব, এত আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব এস.এম আরিফ-উর-রহমান ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম মুভমেন্টের সভাপতি দিলদার হোসেন, এস এস কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমদাদুল হক ভূঞা ও উৎসব উদযাপন কমিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুমন।
নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং এস এস কমিউনিকেশনের পরিকল্পনায় এই উৎসব ১৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে প্রদর্শিত হয় ‘আলোর মিছিল’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
জেআইএম/এমকেআর