ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

পাবনায় মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘নিত্যপুরাণ’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
পাবনায় মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘নিত্যপুরাণ’

পাবনা: পাবনায় বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে নাটক ‘নিত্যপুরাণ’। এটি ছিল নাট্যদল ‘দেশ নাটক’র ১৫তম প্রযোজনা। 

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শীতের কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে নাটকপ্রিয় দর্শক ছুটে আসেন বনমালীতে। দেড় ঘণ্টা সময়ের নাটকটি উপস্থিত দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

‘দেশ নাটক’ পরিবেশিত নব্বই মিনিটের এই নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য নাট্যনির্মাতা ও অভিনেতা মাসুম রেজা। এই ঐতিহাসিক নাটকটির সহকারী নির্দেশক ছিলেন অয়ন চৌধুরী।

দেশের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ঢাকার অন্যতম নাট্যদল দেশ নাটক। দীর্ঘ সময় ধরে চলমান নাটকটি পরিবেশন করে দেশ এবং দেশের বাইরে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে দলটি। এই প্রথমবার পাবনায় বনমালীর আমন্ত্রণে পুনরায় মঞ্চস্থ হলো নাটকটি। মিলনায়তনের সাড়ে আটশ’ আসন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।  

মঞ্চে ১৪ জন অভিনয় শিল্পী তাদের শৈল্পিক বাচন ও অঙ্গভঙ্গিতে মঞ্চে টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। নাটকের অন্যতম চরিত্র একলব্য দৈবিক শক্তিবলে পঞ্চপাণ্ডবের বীরসেনা অর্জুনকে পরাজিত করেন। প্রাণ ভিক্ষায় ছুটে আসেন দ্রৌপদী। জীবনের কাছে পরাজিত হয়েছে ভালোবাসা। আবার ভালোবাসার কাছে উৎসর্গ করেছে জীবন আর দৈবশক্তি। সত্যের কাছে পরাজিত হয়েছে মিথ্যা। ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে নিজেদের সুবিধার জন্য। সব মিলিয়ে কথার শৈল্পিক ছন্দ কোরিওগ্রাফ আর আবহ সংগীত সব মিলিয়ে দারুণ সমন্বয় ছিল নাটকে।  

নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম রেজা বলেন, এই নাটক মহাভারত অবলম্বনে লেখা। একলব্য আখ্যান মহাভারতের  একটি অতিক্ষুদ্র  অংশ। মহাভারতের শরীরজুড়ে যা প্রকটভাবে বর্তমান তা হলো হিংসা, ক্রোধ, প্রতিহিংসা, যুদ্ধ এবং জটিল ও কুটিল রাজনীতি। মহাভারতে একলব্য, দ্রৌপদীসহ অনেকেই এর অসহায় শিকার। নাটকে দেখাতে চেয়েছি দ্রৌপদীর স্বপ্ন, ভালোলাগা না লাগার অনুভূতি যা সর্বকালের সব মানুষেরই থাকে। মূলকথা হলো, দ্রৌপদী প্রথমত মানুষ তারপরে নারী। মহাভারতে দ্রৌপদীর সাথে  একলব্যের সাক্ষাৎ হয় না। কিন্তু আমি এই নাটকে তাদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছি।  

তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে এই নাটকে অনেক গুণী মঞ্চশিল্পী কাজ করেছেন। নতুন এবং পুরাতন শিল্পীদের সমন্বয়ে আবারও আমরা মঞ্চে ফিরেছি কালোত্তীর্ণ নাটক ‘নিত্যপুরাণ’ নিয়ে।  

শিল্পসৃষ্টির প্রেরণা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে দেশ নাট্যদল কাজ করছে বলে জানান তিনি। নাট্য সংগঠনের কর্ণধর ও কুশীলবরা বিশ্বাস করেন, সব মানুষের মধ্যে চিন্তার সূত্রপাত করা যায়। নাটক দেখে মানুষ মানুষকে নিয়ে ভাবুক। মানুষ হয়ে উঠুক মানুষের সংগ্রামশীলতা ও সমাজের বিনির্মাণ প্রচেষ্টায় সহনুভূতিশীল। নাটক হয়ে উঠুক চিন্তাশীল মানুষের বিশ্ব দেখার চোখ।

রুদ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় নাটকটির সমন্বয় করেন আব্দুল হান্নান শেলী। নাটকশেষে অভিনয় শিল্পীদের সাথে স্থানীয় নাট্য শিল্পীদের মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দেশ নাটকের এবারের যাত্রা।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।