১৯৫২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ের চেম্বুরে প্রভাবশালী পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম নেন ঋষি রাজ কাপুর। বলিউডের তৎকালীন তারকা অভিনেতা ও পরিচালক রাজ কাপুরের দ্বিতীয় সন্তান এবং অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপুরের পৌত্র তিনি।
মুম্বাইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুল ও আজমীরের মায়ো কলেজে পড়াশুনা করেন ঋষি। অভিনয় জীবনের শুরু থেকেই বাজিমাত করেছেন একের পর এক। শিশু শিল্পী হিসেবে তিনি অভিষেক করেন ১৯৭০ সালে। তার বাবা রাজ কাপুরের সিনেমা ‘মেরা নাম জোকার’-এ অভিনয় করে অভিষেকেই জিতে নেন সেরা শিশু অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার। প্রধান চরিত্রে ঋষির প্রথম সিনেমা ছিল ডিম্পল কাপাড়িয়ার বিপরীতে ‘ববি’ (১৯৭৩)। আর সেটাতেও সেরা অভিনেতা হিসেবে জিতে নেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড।
সাফল্যের এই ধারায় ১৯৭৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ৯২টি সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন ঋষি কাপুর। ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি মূলত পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন। দারুণ কিছু সিনেমায় অভিনয় করে তিনি ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কার ও লাইফটাইম এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। তার মোট সিনেমার সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক।
১৯৮০ সালের ২২ জানুয়ারি অভিনেত্রী নীতু সিংকে বিয়ে করেন ঋষি কাপুর। তারা একসঙ্গে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন অন্তত ১৫টি সিনেমায়। এই তারকা দম্পতির দুই সন্তান। তাদের এক সন্তান বলিউডের বর্তমান জনপ্রিয় অভিনেতা রণবীর কাপুর ১৯৮২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্ম নেন। আরেক সন্তান ঋদ্ধিমা কাপুর সাহানি একজন ডিজাইনার।
ব্যক্তিগত জীবনে কিছু বিতর্কও ছিল ঋষিকে নিয়ে। সামাজিক মাধ্যমে ‘গোমাংস খাওয়া হিন্দু’ হওয়া প্রসঙ্গে তার মন্তব্য ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। ঋষি কাপুরের আত্মজীবনী ‘খুল্লাম খুল্লা: ঋষি কাপুর আনসেন্সর্ড’ প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি।
এর পরের বছর ২০১৮ সালে ঋষির শরীরে বোন ম্যারো ক্যান্সার ধরা পড়ে। স্ত্রী নীতুকে নিয়ে তিনি নিউইয়র্ক যান চিকিৎসার জন্য। দীর্ঘকাল চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দেশে ফেরেন এই প্রখ্যাত অভিনেতা। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিলে গুরুতর শ্বাসকষ্ট নিয়ে মুম্বাইয়ের এইচ এন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ৩০ এপ্রিল সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য অভিনেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২০
এমকেআর