বর্ষীয়ান চিত্রনাট্যকার, পরিচালক ও প্রযোজক ছটকু আহমেদ। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) ৭৪ পেরিয়ে পঁচাত্তরে পা দিয়েছেন তিনি।
বিশেষ এই দিনটি শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যের সঙ্গে কাটাচ্ছেন ছটকু আহমেদ। কিছুদিন আগে করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন তিনি। তবে এখনো শারীরিক দুর্বলতা কাটেনি তার। তাই জন্মদিনে এবার তেমন কোন আয়োজনও রাখছেন না এই নির্মাতা।
বাংলানিউজকে ছটকু আহমেদ বলেন, ৭৪টা বছর আনন্দে কাটিয়ে দিয়েছি। সেজন্য আল্লাহ্ কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে আমি খুব সুখে সময় পার করেছি এবং করছি। সব সময় সবার ভালোবাসা পেয়েছি। জন্মদিনে অনেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, আমি কৃতজ্ঞ। এভাবে যাতে সামনের দিনগুলো কাটাতে পারি, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাইছি।
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন আগেই করোনা থেকে সেরে উঠলাম। তবে শরীরে শক্তি পাচ্ছি কম। একটু হাঁটাহাঁটি করলেই দুর্বল হয়ে যাই। তাই আপাতত কাজেও বিরতি চলছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, এটাই চাওয়া।
১৯৪৬ সালের ৬ অক্টোবর পুরনো ঢাকার নারিন্দায় ছটকু আহমেদের জন্ম। কিন্তু তার পৈতৃক ভিটা বিক্রমপুরে। তার বাবা শরফুদ্দীন আহমেদ ছিলেন সিভিল ডিফেন্সের ট্রেনিং অফিসার ও জোহরা শরফুদ্দীন ছিলেন নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। বাবা-মার চাকরির সুবাদে ছটকুর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে।
ছোট পর্দা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন ছটকু আহমেদ। ১৯৬২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নিয়ে প্রথম নাটক পরিচালনা করেন তিনি। ১৯৭২ সালের ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার সহকারী পরিচালক হিসাবে তার বড় পর্দায় যাত্রা শুরু হয়।
১৯৮২ সালে ‘নাত বৌ’সিনেমার মধ্য দিয়ে একক পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে ছটকু আহমেদের। এতে অভিনয় করেন তখনকার সুপারহিট জুটি রাজ্জাক-ববিতা। এরপর 'রাজদণ্ড', 'গৃহবিবাদ', 'চেতনা', 'মায়া-মমতা', 'সত্যের মৃত্যুর নেই', 'বুকের ভেতর আগুন', 'বুকভরা ভালোবাসা', 'মিথ্যার মৃত্যু', 'প্রতিবাদী মাস্টার' ও 'আজকের রূপবান'সহ ১৫টি সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি। ।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ছটকু আহমেদ তিন শতাধিক সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন। যার মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে 'সত্য মিথ্যা', 'বাংলার বধূ', 'লালু মাস্তান', 'পিতা মাতা সন্তান', 'ঘাতক' ও 'চেতনা'। তিনি এজে মিন্টু পরিচালিত 'সত্য মিথ্যা' সিনেমার সংলাপ করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
১৯৭৯ সালে ছটকু আহমেদ বিয়ে করেন মসরুরা আহমেদকে। তার স্ত্রী ‘বুক ভরা ভালোবাসা’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’সিনেমার প্রযোজক। তাদের সংসারে চার মেয়ে। বড় মেয়ে সাদিয়া আহমেদ, মেজো মেয়ে ফারিয়া আহমেদ, সেজো মেয়ে শাহরিয়া আহমেদ ও ছোট মেয়ে নাজিয়া আহমেদ। তারা সবাই উচ্চশিক্ষিত।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২০
জেআইএম