ঢালিউডের অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রের অন্যতম পথ-প্রদর্শক ছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা জসিম। পর্দায় যিনি ছিলেন শোষিত কিংবা বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতেন।
দেশের দুর্দিনে যিনি অস্ত্র হাতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধেও। শনিবার (১৪ আগস্ট) এই অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধার জন্মদিন।
জসিম ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার কেরানীগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রূপালি পর্দায় খলনায়ক হিসেবে অভিনয় শুরু করলেও জসীম জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন নায়ক হিসেবে।
১৯৭২ সালে ‘দেবর’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় জসিমের। কিন্তু জনপ্রিয়তা পান বলিউডের ‘শোলে’ সিনেমার রিমেক ‘দোস্ত দুশমন’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিনয় দিয়ে জয় করে নেন সিনেপ্রেমীদের মন।
প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন জসিম। আশি ও নব্বই দশকের প্রায় সব জনপ্রিয় নায়িকাদের সঙ্গেই জুটি বেঁধেছেন। তবে শাবানা আর রোজিনার সঙ্গে তার জুটি দর্শক মহলে বেশি সমাদৃত ছিল।
জসিম অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘তুফান’, ‘জবাব’, ‘নাগ নাগিনী’, ‘বদলা’, ‘বারুদ’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘লালু মাস্তান’, ‘নবাবজাদা’, ‘অভিযান’, ‘কালিয়া’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘গরিবের ওস্তাদ’, ‘ভাইবোন’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘পরিবার’, ‘রাজা বাবু’, ‘বুকের ধন’, ‘স্বামী কেন আসামী’, ‘লাল গোলাপ’, ‘দাগী’, ‘টাইগার’, ‘হাবিলদার’, ‘ভালোবাসার ঘর’ প্রভৃতি।
মস্তিষ্কজনিত রোগে ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর জসিম না ফেরার দেশে চলে যান। ঢাকাই সিনেমার নায়কদের মধ্যে জসিমই একমাত্র নায়ক, যার নামে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (বিএফডিসি)তে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়েছে।
জসিম ব্যক্তি জীবরে দুই বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম স্ত্রী ছিলেন নায়িকা সুচরিতা। পরবর্তীতে ঢাকার প্রথম সবাক সিনেমার নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন। জসিমের এই ঘরে রয়েছে তিন পুত্র সন্তান। তারা তিনজনই সংগীতের সঙ্গে জড়িত। ‘ওন্ড’ নামের তাদের রক মেটাল ব্যান্ডদলও রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২১
জেআইএম