ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পোষ মেনেছে বুনো শিয়াল, ‘খ্যাক’ ডাকলেই চলে আসে কাছে 

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
পোষ মেনেছে বুনো শিয়াল, ‘খ্যাক’ ডাকলেই চলে আসে কাছে  সঞ্জিত ও তার পোষা শিয়াল খ্যাক

খুলনা: বুনো শিয়ালকে পোষ মানিয়ে চমক দেখালেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আমভিটা এলাকার সঞ্জিত মন্ডল সরু।

শিয়ালটির নাম তিনি রেখেছেন - ‘খ্যাক’।

এ নাম ধরে ডাকলেই শিয়ালটি মালিকের চলে আসে কাছে।  

আদর-যত্ন ও ভালোবাসায় পোষা শিয়ালটির চরিত্রও পাল্টে দিয়েছেন সঞ্জিত। আর সব শিয়ালের মতো এটি হাঁস-মুরগিকে আক্রমণ করে না। মানুষ দেখে দৌড়ে পালায় না। মানুষের ভিড়েই দিব্যি ঘুরে বেড়ায় শিয়ালটি।

আর পোষ মানা এমন চরিত্রের শিয়াল দেখতে সঞ্জিতের বাড়িতে প্রতিদিন বহু মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।

বনের শিয়ালটি কীভাবে পেলেন আর এটি পোষ মানলোই কী করে জানতে চাইলে সঞ্জিত মন্ডল সরু বলেন, প্রায় ৪ মাস আগে একদিন সারারাত বৃষ্টি হয়। সকালে ছোট ছেলেসহ বাগানে গিয়ে দেখি খ্যাকশিয়ালটি পড়ে আছে। মুমূর্ষু অবস্থা তার। শিয়ালের এই অবস্থা দেখে আমার ছেলের মায়া হয়। সে  একে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলে। ছেলের কথামতো বাগান থেকে শিয়ালটিকে বাড়ি নিয়ে আসি। এরপর সিরিঞ্জে করে দুধ খাইয়ে বড় করি।  

সঞ্জিতের পোষা শিয়াল খ্যাক

তিনি বলেন, শিয়ালটিকে অনেকবার ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু এটি আর বাগানে যেতে চায় না। ঘুরে ফিরে আমাদের কাছেই চলে আসে। তখন থেকেই শিয়ালটি আমার ছেলের সঙ্গে সন্তানের মতো থাকে। পরিবারের সবার সঙ্গেই সখ্য রয়েছে তার। অন্য শিয়ালরা ডাকলে তাদের সঙ্গে এটিও ডাকে। তবে সঙ্গে যায় না।

নাম রাখার বিষয়ে সঞ্জিত বলেন, শিয়ালটিকে আমার ছেলে ‘খ্যাক’ বলে ডাকে। এরপর থেকে ওর নাম খ্যাক হয়ে যায়। সবাই এখন এই নামেই ডাকে।  

কাউকে আক্রমণ করে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, লোকজন শিয়ালটিকে দেখতে আসে। কারও কোনো ক্ষতি আজ পর্যন্ত করেনি এটি। কাউকে আক্রমণ করে না। সবার সঙ্গে ঘুরে ফিরে বেড়ায়। আমার ছেলে একে নিয়ে বেড়ায়। কোনো হাঁস মুরগিকেও আক্রমণ করেনি।  

এদিকে পোষা শিয়ালটি দেখতে প্রতিদিন অনেক মানুষের আগমন ঘটে সঞ্জিতের বাড়িতে।

সঞ্জিতের সঙ্গে বন্য শিয়ালের বন্ধুত্ব দেখে তাকে পশুপ্রেমী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন স্থানীয়রা।

সঞ্জিতের প্রতিবেশী ইয়াসিন শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আমার কাছে অবাক লেগেছে যে, হিংস্র প্রাণীও মানুষের ভালোবাসা পেলে পরিবর্তন হয়। অনেক মানুষ প্রতিদিন পোষ মানা শিয়ালকে দেখতে আসেন সঞ্জিতের বাড়িতে। শিয়ালটি কখনও কাউকে আক্রমণ করেনি।

ডুমুরিয়া উপজেলার ১২ নং রংপুর ইউনিয়নের ৮ নং ইউপি সদস্য বিপুল মহলদার বলেন, শিয়ালের সঙ্গে সখ্যতা গড়েছেন সঞ্জিত। সত্যিই তিনি পশুপ্রেমী। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
এমআরএম/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।