ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

হালকা হলদে চোখের ‘খুড়ুলে-প্যাঁচা’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
হালকা হলদে চোখের ‘খুড়ুলে-প্যাঁচা’ ‘খুড়ুলে-প্যাঁচা’ ক্লান্তির হাই তুলেছে | ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: দ্রুত শীত নেমে আসে চা বাগানে। বিকেল গড়াতেই সূর্যের উত্তাপ মৃদু হয়ে যেতে থাকে।

সন্ধ্যে নামার সাথে সাথে চারদিক গ্রাস করে নেয় হিমেল হাওয়া।

সেলসিয়াসের হিসাবে দেশের চা শিল্পাঞ্চলের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে তাপামাত্রার পারদ দশের কোঠায়। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই শীতে এ অঞ্চলের পাখিরাজ্যের কোনো কোনো পাখিদের মাঝেও ছড়ায় জড়তা। ক্লান্তিতে ভর করে তাদের শরীরের লোমকূপে নেমে আসে যেন কিছুটা অলসতা। সামান্য উষ্ণতার জন্য পাখিরা ফিরে আসে সূর্যোলোকের কাছে। মিষ্টি রোদের প্রয়োজনীয় উত্তাপটুকু গায়ে মেখে ওরা দূর করে কিছুক্ষণের জড়তা।

প্যাঁচা গোত্রীয় পাখিরা মূলত নিশাচর। রাতের আঁধারেই নিজেদের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে। দলের সাথে একত্রে ওড়াউড়ি, চিৎকার-ডাকাডাকি। শিকার ধরার তীক্ষ্ম প্রহর কাটানো  সবকিছুই সম্মিলিত প্রয়াসে। তবে এর ব্যতিক্রম যে নেই, সেটাও জোর দিয়ে বলা যাবে না।

মঙ্গলবারের সকালটা প্যাঁচা প্রজাতির এক পাখির জড়তায় ভরা! হেমন্তের শীত দূর করা রোদনির্ভর উত্তাপ এসে পড়ে গাছের ডালে। তাতেই যেন সবটুকু আরাম! সারা রাত জেগে থাকার ক্লান্তিটুকু রৌদ্রতাপে কাটাচ্ছে ‘খুড়ুলে-প্যাঁচা’। শুধু তা-ই নয়, রীতিমতো মুখ বাঁকিয়ে জানান দিয়েছে এ ক্লান্তির গভীরতাটুকু।


পাহাড়ি এলাকার নিশাচর পাখি ‘খুড়ুলে-প্যাঁচা’ | ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

‘খুড়ুলে-প্যাঁচা’র ইংরেজি নাম Spotted Owlet  বৈজ্ঞানিক নাম  Atheme brama। পাখিটি দৈর্ঘ্যে ২৩ সেন্টিমিটার এবং ওজনে ১৬৫ গ্রাম। পাখিটির দেহ কালচে-বাদামি। পুরো দেহজুড়ে আড়াআড়ি সাদা ডোরা। তার বুক বাদামি এবং পেট সাদাটে। ঠোঁটের রং হলদে-সবুজ এবং চোখ লেবু-হলুদ রঙের।

অনেকক্ষণ ধরে পাখিটিকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেলো, সে নিশাচর হলেও দিনের আলোতে উঁচু ডালে বসে চারদিক বেশ খেয়াল রাখছে। পাশের ডালে বসে থাকা তার দলীয় সাথীরাও রয়েছে। তবে তাদের অবস্থান এই পাখিটির থেকে অনেক দূরে। পাতি-শিয়াল ডাকতেই তার চোখ আরও বড় আকৃতির হয়ে নিজের অবস্থান পর্যবেক্ষণের দিকে মনোযোগী হলো।

তারপর আরও মজার দৃশ্য ফুটে উঠলো! ডালে বসে থাকতে থাকতে মুখ বাঁকা করে পাখিটি তুললো ক্লান্তির হাই!

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন), বাংলাদেশের ‘লাল-তালিকা’য় পাখিটি ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ হিসেবে তালিকাভুক্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
বিবিবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।