ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

জনবল-ব্যবস্থাপনার অভাবে কার্যকারিতা হারিয়েছে ইকোপার্ক

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৪
জনবল-ব্যবস্থাপনার অভাবে কার্যকারিতা হারিয়েছে ইকোপার্ক ইকোপার্কের প্রবেশপথ। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: জনবল ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার অভাবে কার্যকারিতা হারিয়েছে জেলা শহরের কাছাকাছি অবস্থিত ইকোপার্কটি। এটি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।

প্রায় দুই দশকের কাছাকাছি সময়ে মৌলভীবাজার শহর সংলগ্ন এই পার্কটিকে ‘বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক’ ঘোষণা করা হয়।

এখনও পার্কটিতে গড়ে ওঠেনি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা। ইকোপার্ক রক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় নেই প্রয়োজনীয় জনবল। ৮৮৭ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত ইকোপার্কটি চলছে মাত্র তিনজন লোকবল দিয়ে।

ইকোপার্কের চারপাশে জনবসতি থাকায় জনসাধারণ এখানে অবাধে চলাচল করছে। সংরক্ষিত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও নেই কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। জেলা শহরের কাছে অবস্থান হলেও সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তার অভাবে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারেনি ইকোপার্কটি।

বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলায় মিশ্র চিরহরিৎ প্রাকৃতিক বনে গড়ে তোলা হয়েছে বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক। বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ২০০৬ সালে সংরক্ষিত এই বনভূমিকে ইকোপার্ক ঘোষণা করা হয়। ইকোপার্কটির আয়তন ৮৮৭ একর।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইকোপার্ক নিয়ে লং টার্ম পরিকল্পনা দরকার। আমরা একটা পরিকল্পনা জমা দিয়েছিলাম। সেই আলোকে একটা মাস্টারপ্ল্যান নেওয়া হচ্ছে।

বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধার জন্য ২০০৬-০৭ অর্থবছরে দুটি দুই কক্ষবিশিষ্ট ইকোকটেজ, চারটি পিকনিক স্পট, দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, চারটি নিরাপত্তাচৌকি, পাঁচটি গণশৌচাগার, একটি টিকিট কাউন্টার ও একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় সোয়া কোটি টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু জনবল সংকটে এটি আর চালু হয়নি।

ইকোপার্কে ভেতরে পরিত্যক্ত অফিস।  ছবি: বাংলানিউজ

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে লাউয়াছড়া-সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে বনায়ন ও ইকোট্যুরিজম উন্নয়ন প্রকল্প নামের একটি প্রকল্প পরিকল্পনা বন অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছিল। এতে বলা হয়, অনেক মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণী এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে। অনেক প্রজাতি বিরল ও বিপন্ন হিসেবে টিকে আছে। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যমান বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় এই বনভূমিগুলোয় বনের আচ্ছাদন বাড়ানো প্রয়োজন।

বনাঞ্চলগুলোকে বন্য প্রাণীর উত্তম আবাসস্থলে পরিণত করতে বনজ সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ করা, বেতবাগান তৈরি, সহযোগী প্রাকৃতিক উদ্ভিদ পুনরুৎপাদনের পরিবেশ তৈরি প্রয়োজন। পরিবেশবান্ধব পর্যটনের জন্য পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ, গাছপালার সঙ্গে পরিচয়ের ব্যবস্থা, পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পটি আর অগ্রসর হয়নি।

বর্ষিজোড়া ইকোপার্কের বিট কর্মকর্তা আবু নঈম মো. নুরুন্নবী বলেন, জনবল বাড়ানো দরকার। তিনজন স্টাফের পক্ষে এত বড় এলাকা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। চারদিকে জনবসতি, সীমানা প্রাচীর নেই। পার্কের ভেতর দিয়ে সড়ক। রাত-দিন মানুষ যাতায়াত করেন। বিকল্প পথ প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৪
বিবিবি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।