মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে মরা গরু ফেলে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। গৃহপালিত এই প্রাণীটি মোটাসোটা হওয়ায় তার জীবনকাল শেষ হয়ে যাওয়ার পর মাটি চাপা না দিয়ে প্রকৃতিতে ফেলে রাখলে সহজে মাটিতে মিশে যায় না।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি এক স্থূল আকৃতির গরু কে বা কারা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া বিট সীমানার ড্রেনে ফেলে গেছে। এর ফলে তীব্র দুর্গন্ধে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
লাউয়াছড়া প্রবেশমুখের চা দোকান ব্যবসায়ী সাদ্দাম জানান, মাঝে মাঝে মরা গরু পড়ে থাকতে দেখা যায়। লোকমুখে শুনেছি, লাউয়াছড়ার পাকা সড়ক দিয়ে ট্রাকবোঝাই করে গরুর গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় কোনো গরু যদি মরে যায়, তখন ওরা এভাবেই বনের ভেতরে মরা গরু ফেরে যায়। এমন সতর্কভাবে ফেলে কেউ সেই ঘটনাটি দেখতে পায় না। তো আপনি কাকে ধরবেন?
আগে এই সমস্যাটা ছিল না। ইদানিং মাঝে মাঝে এ সদস্যাটা দেখা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
জানকিছড়া বিটের জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট আব্দুল মালেক বলেন, দুর্গন্ধে কেউ পাকা সড়ক দিয়ে হেঁটে যেতে পারে না। পাকা সড়ক সংলগ্ন থাকায় প্রতি মুহূর্তে যানবাহন চলাচল করে বলে প্রাণীরাও এটাকে খেতে আসে না।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, কোনো প্রাণী যখন মারা যায় তখন তার শরীরের কোষগুলো কার্যক্ষমতা হারায় এবং ধীরে ধীরে পুরো দেহের পচন শুরু হয়। এই সময় শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যাকটেরিয়া এবং এনজাইমগুলো কোষ এবং টিস্যুগুলোকে ভেঙে ফেলতে শুরু করে। পচনের সময় হাইড্রোজেন সালফাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্যাস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ তৈরির ফলেই তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ায়।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান বাংলানিউজকে বলেন, আমি এই প্রথম আপনার থেকে মরা গরু ফেলে যাওয়ার ছবিটি দেখলাম। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। লাউয়াছড়ায় বন টহলে থাকা সিপিজি সদস্য (কমিউনিটি পেট্রোরিং গ্রুপ), বন বিভাগের নিরাপত্তাকর্মীসহ সবাইকে আমি বলে দেবো যাতে এমন ঘটনার কেউ না ঘটনাতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২৪
বিবিবি/এএটি