মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের বর্ষিজুরা ফরেস্ট বিটের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের গবেষকরা বিরল প্রজাতির অসুস্থ একটি অতিথি কালা শকুনকে চিকিৎসাসহ সেবা-যত্ন করছেন।
বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান প্রায় ২ মাস ধরে পাখিটিকে দেখভাল করে আসছেন।
বর্তমানে পাখিটি অনেকটা সুস্থ হলেও ডানা ও লেজে ওড়ার জন্য পর্যাপ্ত পালক না থাকায় এটিকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এটি বিরল প্রজাতির একটি কালা শকুন। এরা হিমালয়ের কাছাকাছি ও ভারত-নেপাল অঞ্চলে বিচরণ করে থাকে। এদেশের শকুনকে বলা হয় বাংলা শকুন। বাংলা শকুনের মতো এরা দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করে না। কালা শকুন সাধারণত একা বা জোড়া বেঁধে চলাফেরা করে থাকে। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে এদের কালেভদ্রে দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, এই শকুনটি খাবার জোগাড় করতে না পেরে উড়তে উড়তে একসময় দুর্বল হয়ে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর গ্রামে নেমে আসে। এরপর স্থানীয়দের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আহত ও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খবর পেয়ে ২৮ জানুয়ারি এটিকে উদ্ধার করে বর্ষিজুরা ফরেস্ট বিটে নিয়ে আসে।
এসময় শকুনটির পা ফোলা ছিলো এবং ডানা (ফ্লাইং ফেদার) ও লেজের (টেল ফেদার) অনেক পালকই ছিলোনা।
বর্তমানে ডানায় প্রায় ১০টি পালক ও লেজের অংশে কিছু পালক গজিয়েছে। তবে এখনো তার উড়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য হয়নি।
এছাড়া এটি গত প্রায় ২ মাসে গৃহপালিত জীবের মতো হয়ে গেছে তাই এটি এখন ছেড়ে দিতে হলে বন্য পরিবেশের জন্য উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খাঁন বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিন বিকেলে তিনি পাখিটিকে ফরেস্ট বিট অফিসের সামনে নিয়ে ওড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) মো. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘এটি আমাদের দেশের জন্য বিরল প্রজাতির শকুন। বর্তমানে শকুনটি অনেকটা সুস্থ। ওড়ার মতো অবস্থা হলেই এটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে’’।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৩
সম্পাদনা: শিমুল সুলতানা, নিউজরুম এডিটর, [email protected]; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর