ঢাকা: প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বাগেরহাটের রামপালে প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্রিন বেল্ট ট্রাস্ট আয়োজিত এক সমাবেশে পরিবেশ কর্মীরা এ দাবি উত্থাপন করেন।
তারা বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় এ ধরনের প্রকল্প হলে শুধু আবাদি জমি ও বসতবাড়ি ধ্বংস হবে না, বিপর্যস্ত হবে বিশ্বের একক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্য। চরম হুমকির মুখে পড়বে বাংলাদেশের গর্ব বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। কারণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র আশ্রয়স্থল সুন্দরবন।
উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুলের সভাপতিত্বে ও গ্রিন বেল্ট ট্রাস্টের মহাপরিচালক জসিম কাতাবীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিটিজেনস রাইটসের মহাসচিব তুসার রেহমান, আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল্লাহ বাবু, এডভোকেট এম মোজাহেদুল ইসলাম, আলী হাজারী, মীর লোকমান সেখ, আব্দুর রাজ্জাক রাহাত, মোহাম্মদ এরশাদুল ইসলাম, জাহিদ আল জামশেদ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার শুধু বাংলাদেশের গর্বই নয়, এই বাঘ ও বাঘের বিচরণভূমি সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে আসেন। এর মাধ্যমে আমরা প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রাও অর্জন করে থাকি।
কিন্তু বিশ্বব্যাপি যখন বাঘ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশবাদীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তখন বাংলাদেশ সরকার সেই বাঘের অস্তিত্বের বিষয়টি আমলে না নিয়ে সুন্দরবন ধ্বংসের নানা অপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
রামপালে প্রস্তাবিত তাপ-বিদ্যুৎ প্রকল্প তেমনই একটি আত্মবিনাশী উদ্যোগ। তাই বাঘ এবং সুন্দরবন রক্ষার স্বার্থে এই প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে হবে বলে বক্তারা সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বাঘ রক্ষায় সমাবেশ থেকে পাঁচটি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। এগুলো হচ্ছেÑ সংরক্ষণ ও প্রজননের মাধ্যমে আগামী ২০২২ সালে বাঘের সংখ্যা বর্তমান সংখ্যা থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে হবে, বাঘ ও বাঘের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত বনাঞ্চলসমূহকে সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে সংরক্ষণ ও এর ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে।
এছাড়া বাঘের আবাসস্থলসমূহকে জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের মূল আধার হিসেবে চিহ্নিত করে কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে, বাঘসমৃদ্ধ বনাঞ্চলে কোনো শিল্প কারখানা স্থাপন ও খনিজ পদার্থ অনুসন্ধান বা উত্তোলনের নামে পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকা- পরিচালনা করা যাবে না।
দাবিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন বাঘসমৃদ্ধ বনাঞ্চলে বাঘের চলাচল যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য দুই দেশের মধ্যে ট্রান্সবাউন্ডারি ইস্যু নিয়ে যৌথ প্রটোকল স্বাক্ষর করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১১