ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সুন্দরবনের নিজ আবাসে ফিরবে জলচর 'মদনটাক'

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭
সুন্দরবনের নিজ আবাসে ফিরবে জলচর 'মদনটাক' লম্বা ঠোটের বিশালদেহী পাখি‘মদনটাক’। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: দেশে বিলুপ্ত প্রজাতির পাখিদের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘মদনটাক’। লম্বা ঠোটের বিশালদেহী একটা পাখি। খুব বেশি চতুর না, মাথায়ও টাক। তাই পাখিটাকে বলা হয় মদনটাক!

এ পাখিটি চলে এসেছে রাজশাহীর পবা উপজেলার হাড়ুপুরে। রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় কিশোররা পাখিটিকে ধরে ফেলে।

পরে তা দিয়েই বনভোজনের প্রস্তুতি শুরু করে।  

ঠিক এমন সময় গ্রামের কেতাব আলী নামে এক পাখি প্রেমীর চোখে পড়ে বিষয়টি। নিজ উদ্যোগেই তাদের হাত থেকে তিনি পাখিটিকে উদ্ধার করেন। এরপর রাজশাহীর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে খবর দেন। সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) মদনটাক পাখিটাকে নিয়ে যান বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

রাজশাহীর সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা এসএম রুহুল আমিন জানান, এখন আর সচরাচর এ পাখি দেখা যায় না। জলচর এই পাখির দু’টি প্রজাতি আছে। বাংলাদেশ থেকে বড় মদনটাক প্রজাতি অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে অল্প সংখ্যক ছোট মদনটাক এখনও টিকে আছে। পথভ্রষ্ট হয়ে মাঝেমধ্যে এরা লোকালয়ে চলে আসে। সময়মত খবর না পেলে তাদের রক্ষা করাই দায় হয়ে পড়ে।

রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ বলেন, মদনটাক জলচর পাখি। জলাশয়ের পাশেই তার বাস। পথ ভুলে সে লোকালয়ে চলে এসেছে। খাবারের অভাবে এরই মধ্যে পাখিটি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। ঠিকমত ডানা মেলে উড়তেও পারছিল না।  

তবে উদ্ধারের পর থেকে পরিচর্যা ও চিকিৎসা চলছে। এখন পাখিটি অনেকটাই সুস্থ। পাখাও মেলতে পারছে। বর্তমানে মদনটাক পাখিটাকে পবা বন বিভাগের নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। মাছ খেতে খুব ভালোবাসে। তাই তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ খাওয়ানো হচ্ছে। এই পাখির আদি নিবাস হচ্ছে সুন্দরবন। লম্বা ঠোট দিয়ে বনের গহীনে থাকা জলাশয়ে গিয়ে এরা মাছ শিকার করে খায়। তাকে আরও ক’দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এর পর সুন্দরবনে পাখিটাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

মদনটাক পাখির পিঠের দিকটা কালো। দেহের নিচের দিকটা সাদা রঙের। পা লম্বা। মাথায় টাক। মুখের চামড়া ও ঘাড় লালচে। জলমগ্ন মাঠ, খাল, জলময় বন ও মোহনায় একা বা জোড়ায় বিচরণ করে। সাধারণত বড় গাছে ডালপালা দিয়ে এরা বাসা বানিয়ে থাকে।

এর আগে ২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের কলাগাছিয়ায় একটি ছোট মদনটাক উদ্ধার হয়। ২০১৩ সালের এপ্রিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুর থেকে দু’টি ছোট মদনটাক উদ্ধার করা হয়।  

ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ে একটি মদনটাক পাওয়া যায়। এছাড়া গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে একটি পাখি উদ্ধার করা হয়েছিল। তার পর রাজশাহীর পবার হাড়ুপুরে ধরা পড়লো এই পাখিটি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭ 
এসএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।