চোখজুড়ানো চাবাগান এলাকায় এখন মাঝেমাঝে মেঘেদের গুরুগম্ভীর ধ্বনি আকাশের কোণে কোণে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। মেঘলা আকাশ চা বাগানের বাসন্তি রূপকে হঠাৎই বদলে দিয়ে করে তুলেছে বর্ষামোহন রূপ।
সবুজ পাতার উপরে কিংবা ভেতরে বৃষ্টির গুঁড়িগুঁড়ি ধারা পৌঁছে গিয়ে চা পাতাদের সদলবলে জেগে ওঠার আহ্বান জানায়। বৃষ্টিপাত এভাবে যুগের পর যুগ ধরে দু’টি পাতা একটি কুঁড়িকে জাগিয়ে আসছে।
১৮৫৪ সালে ব্রিটিশরা সিলেটে মালনিছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠা করে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের আবাদ শুরু করে।
জেরিন চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা বাংলানিউজকে বলেন, 'এই বৃষ্টিপাতের ফলে চা গাছে নতুন কুঁড়ি গজাবে। ফলে পাতা চয়ন (পাতা উত্তোলন) আরো আগে করা সম্ভব হবে। এই বৃষ্টি চায়ের জন্য খুব উপকারি এবং সহায়ক। '
তিনি আরো বলেন, সব ফসলের জন্যই বৃষ্টিপাত উপকারি। কিন্তু চায়ের জন্য আরো বেশি উপকারি। কারণ বৃষ্টিপাত ছাড়া চাগাছ বাঁচানো সম্ভব নয়। তবে আরেকটি বিষয় হলো, বৃষ্টির সময় যদি বৃষ্টি না হয় অর্থাৎ গ্যাপ-পিরিয়ড যদি বেড়ে যায়, তখন আবার বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। '
ফিনলে চা-এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) গোলাম মোহাম্মদ শিবলি বাংলানিউজকে বলেন, 'বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মাপের ভিত্তিতে আমরা চা গাছগুলোতে প্রুনিং (ছাঁটাই) করে থাকি। বসন্তকাল এলে সাধারণ নিয়মেই কুঁড়ি গজায়। কিন্তু বৃষ্টিপাত হলে সেই কুঁড়ি খুব দ্রুত অঙ্কুরিত হয়। এভাবেই আগাম বৃষ্টিপাত চায়ের উৎপাদনে শুভ বার্তা নিয়ে আসে। '
তিনি আরো বলেন, 'আমরা চা বাগানে মাঝেমাঝে ইয়াং-টি (নবীন চা) এর জন্য ইরিগেশনের (সেচ) ব্যবস্থা করি। কিন্তু এর থেকেও অনেক উত্তম প্রাকৃতিক বৃষ্টি। কারণ এর প্রভাব পুরো চা বাগান এলাকা জুড়ে কার্যকর থাকে।
চায়ের জন্য বছরে প্রায় ১৫০ থেকে ২৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত প্রয়োজন বলে জানান উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম মোহাম্মদ শিবলি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭/আপডেট ১৩৫৫ ঘণ্টা
বিবিবি/এসএইচ/জেএম