এই বৃষ্টিতে কীভাবে থাকে পাখিরা? কীভাবেইবা পাখিরা বৃষ্টিধারা গায়ে মেখে দিব্বি টিকে থাকে? এই প্রশ্ন অনেকেরই। প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টিকে গায়ে না মাখার শরীরিক ক্ষমতা পাখিদের রয়েছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি বাংলা-নীলকান্ত পাখি (Indian Roller) কী অদ্ভুতভাবে বৃষ্টিতে ভিজে চলেছে। ৩৩ সেন্টিমিটারের এই পাখিটিকে বৃষ্টি যেন তার সহস্রকণা দিয়ে ধুয়ে-মুছে শুদ্ধ করে তুলছে। এভাবেই পাখিরা বৃষ্টিভেজা হয়ে বছরের পর বছর ধরে বনে-জঙ্গলে, টিলায় আপন জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক এই বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ‘অনেকের ধারণা বৃষ্টিতে পাখি বুঝি কষ্টে থাকে! মানুষের যেমন মাথার উপর ছাঁদ আছে। পাখির কিন্তু তেমনটি নেই। পাখিকে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই তো থাকতে হবে। পালানোর জায়গা নেই। কখনো পাতার নিচে আশ্রয় নেয়। কিছুক্ষণ পর সেই জায়গাটিও বৃষ্টিকণা এসে দখল করে। অর্থাৎ বৃষ্টি থেকে রক্ষা তো পায় না। ’
‘এই বৃষ্টিতে আমরা যেমন ছাতা ছাড়া খুব অসহায় বোধ করি, পাখিরা কিন্তু তা মোটেই করে না। কারণ পাখি কোটি বছর ধরে বৃষ্টির মধ্যেই সে দিব্বি টিকে থাকতে পারে। অধিকাংশ পাখিরই পালক এমন যে সে চাইলে নিজেকে একদম শুকনাও রাখতে পারে। অধিকাংশ পাখির পালক এমনভাবে রয়েছে যে সমস্ত পানি গায়ের উপর দিলে চলে যায়। এক ফোটা পানিও তার ভেতর প্রবেশ করতে পারে না। ’
বৃষ্টিভেজা পাখির কথা উল্লেখ করে ইনাম আল হক বলেন, ‘আবার অনেক পাখি নিজে ইচ্ছে করেই বৃষ্টিতে ভিজে। গায়ের পালকটা একটু উঠিয়ে নেয়। তারপর পুরো শরীর ভিজে। কারণ পাখিরাও কিন্তু পানিতে গোলস করে। অল্প বৃষ্টিতে সে ভিজে থাকে। কিন্তু যখন সে বুঝতে পারে যে অনেক বেশি বৃষ্টি হবে তখন ঘণ পাতার আড়ালে বা যেখানে একটু বৃষ্টি কম পড়বে সেখানে বসে ডানাগুলো টাইট করে নিজেকে রাখে। মুখ, ঠোঁট এবং চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ এভাবে থাকে। ’
তারপর বৃষ্টি শেষ হয়ে গেলে জোরে একটা গাঝাড়া দিলেই ওর গায়ে লেগে থাকা সব বৃষ্টিকণাগুলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। ওর গায়ে আর কোনো বৃষ্টির পানি নেই। এভাবেই তারা কোটি বছর ধরে বৃষ্টির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে টিকে আছে বলে জানান পাখি বিজ্ঞানী ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৭
বিবিবি/বিএস