ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

তরুণদের উদ্যোগে বাঁচলো বিপন্ন প্রাণীটি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
 তরুণদের উদ্যোগে বাঁচলো বিপন্ন প্রাণীটি লাউয়াছড়া লেকে অবমুক্তির আগে সন্ধি কচ্ছপ, ছবি : বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: শখের বসে কুচা (মাছমারার বল্লম বিশেষ) দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে বিঁধলো শক্ত একটি প্রাণী। কুচাওয়ালা ব্যক্তিটি আরো সজোরে আঘাত করতেই একটি লোহার সিক বিঁধে যায় কচ্ছপটির শরীরে। আর পালিয়ে যেতে পারলো না কচ্ছপটি। ধরা পড়ে কুচাওয়ালা সেই ব্যক্তির হাতে।
 

এই দৃশ্যটি দেখতেই এলাকার একদল বন্যপ্রাণীপ্রেমী তরুণ এগিয়ে আসে। তারা কুচাওয়ালা ব্যক্তিটিকে বুঝিয়ে তার কাছে থেকে এই কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে।


 
বিপন্নএ প্রাণীটির নাম ‘সন্ধি কচ্ছপ’। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টায় শ্রীমঙ্গল শহরের মাস্টারপাড়া আবাসিক এলাকায় এই বিপন্ন প্রাণীটি উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
 
পরদিন বুধবার (১৬ আগস্ট) ওই তরুণের দল স্থানীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কচ্ছপটিকে অবমুক্তির ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিকেল সাড়ে ৫টায় সদ্ধি কচ্ছপটিকে লাউয়াছড়া স্টুডেন্ট ডর্মেটরি লেকে অবমুক্ত করা হয়।
 
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান, বন্যপ্রাণীপ্রেমী একদল তরুণ এবং বন কর্মচারীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
 
এসিএফ মো. তবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাত সাড়ে দশটায় শ্রীমঙ্গল শহরের মাস্টারপাড়া আবাসিক এলাকায় মাছ কুচায় আটকা পড়ে এই বিপন্ন কচ্ছপটি। এলাকার একদল বন্যপ্রাণীপ্রেমী তরুণ এটিকে উদ্ধার করে নিজেদের কাছে রাখে। পরদিন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের যোগাযোগ করলে আমরা লাউয়াছড়া লেকে কচ্ছপটিকে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেই।


সরীসৃপ গবেষক শাহরীয়ার সিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধি কাছিম মিঠা পানির প্রাণী। এর ইংরেজি নাম Indian Flapshell Turtle। বৈজ্ঞানিকনাম Lissemys punctata। এরা এক সময় আমাদের হাওর-বিল-জলাশয়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ছিল; কিন্তু বর্তমানে মানুষ কর্তৃক ক্রমাগত শিকার, প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো কৃত্রিম মৎস্য খামার এবং নানা প্রকারের দূষণের ফলে এরা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
 
তিনি আরও বলেন, বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে এসব বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ রক্ষা করতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৬ ঘণ্টা, ১৭ আগস্ট, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।