খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিন বিকেলে ঘটনাস্থলে সরজমিনে গিয়ে দেয়া যায়, বিশাল আয়তনের পাহাড়টি কেটে সৌন্দর্যহানিসহ গোটা এলাকার পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর ৪(১) ধারা অনুযায়ী, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যদি মনে করেন কোনো কার্যক্রম পরিবেশ বিধ্বংসী, তবে তিনি যেকোনো কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবেন।
পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে একটি পরিপত্র জারি করে বলা হয়েছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া কোনোভাবেই পাহাড় কাটা যাবে না।
১৯৯২ সালের পরিবেশ নীতি ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমের ৬(৪) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, ‘পাহাড়ি অঞ্চলে মাটি কেটে সমান করা, মাটি খোদাই ও অপসারণ করে কোনো এলাকার ভূমির প্রাকৃতিক অবস্থা বিনষ্ট করা, পাহাড় থেকে যথেচ্ছভাবে মাটি ও পাথর আহরণ করে এমন প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির কার্যক্রম বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আশেকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ০১নং খাস খতিয়ানভূক্ত ৬৫নং জেএলস্থিত ভাড়াউড়া চা বাগানের অন্তর্ভুক্ত শিব মন্দিরের সন্নিকটে ১৭২১, ১৭২২ এবং ১৭১১ নং দাগে প্রায় ৩০ হাজার ঘনফুট মাটির টিলা কাটা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভাড়াউড় চা বাগান কর্তৃপক্ষ পাহাড় কাটছে এমন খবরে আমরা চলতি মাসের ৫ অক্টোবর ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা খুঁজে পাই। তবে কোনো লোকজনকে না পাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আমরা আবারও পাহাড় কাটার সত্যতা খুঁজে পাই এবং বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়কে অবহিত করি।
বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট এর সহকারী পরিচালক পারভেজ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা রোববার দুপুরে ভাড়াউড়া বাগানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল খান বলেন, পাহাড় পরিবেশ রক্ষায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাহাড় পরিবেশ, প্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও পানির স্তর সংরক্ষণ করে থাকে। প্রকৃতির সুস্থতা রক্ষার স্বার্থে পাহাড় কাটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৭
বিবিবি/এমজেএফ