ক্ষুধার এ যন্ত্রণা সইতে না পেরে খাবার খুঁজতে অনেক সময় দিনের আলোতে বেরিয়ে এসেই মানুষের হাতে নির্মমভাবে মারা পড়ে এরা। আমরা আজো বন্যপ্রাণীগুলোর প্রতি আমাদের ভালোবাসাকে জাগাতে পারিনি!
বসবাসভূমি ধ্বংস, খাদ্যসংকটসহ নানা প্রতিবন্ধতায় বিপন্ন হওয়া এক বুনোপ্রাণীর নাম ‘চিতা বিড়াল’।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এর ‘রেডলিস্ট’ তালিকায় চিতা বিড়াল-কে ‘বিপদাপন্ন’ প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনেও এদেরকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাবিত হাসান বলেন, চিতা বিড়ালের এ দুটো ছবি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে তোলা। এরা অত্যন্ত দুরন্ত প্রাণী। মানুষের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই পালিয়ে যায় বলে ছবি ধারণ করাও বেশ কঠিন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত বনপ্রাণী গবেষক ও লেখক ড. মনিরুল খান বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে এই চিতা বিড়াল পাওয়া যায়। গ্রামের ঝোপঝাড়, নলখাগড়া, চারণভূমি ও বা দাবনে এরা বসবাস করে থাকে। তবে বসতি সংকোচন এবং বন ও প্রকৃতির বেপরোয়া নিধনের ফলে বাংলাদেশে এই প্রাণীটি আজ বিপন্ন।
চিতা বিড়ালের শারীরিক বর্ণনায় তিনি বলেন, চিতা বিড়াল দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ওজন প্রায় ৪ কেজি। লেজের দৈর্ঘ্য ২৯ সেন্টিমিটার। পুরুষ এবং স্ত্রী প্রজাতির মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। গায়ে হলুদের উপর কালো রঙের ছাপ। দেহতলে সাদা রঙের উপর হালকা বাদামি ফোঁটা রয়েছে।
খাদ্য তালিকা এবং প্রজনন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী অর্থাৎ ইঁদুর, খরগোস, বনমোরগ, হাঁস, মুরগি, ব্যাঙ প্রভৃতি তাদের খাদ্য তালিকার প্রধান খাবার। আমাদের চিতা বিড়ালদের সারাবছরই প্রজনন মৌসুম। এরা দু-তিনটি করে বাচ্চার জন্ম দিয়ে থাকে।
ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভুটান, হিমালয়ের পাদদেশ, চীন, রাশিয়া, জাপান, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, জাভা ও সুমাত্রা পর্যন্ত এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে বলে জানান প্রখ্যাত বনপ্রাণী গবেষক, লেখক ড. মনিরুল খান।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৭
বিবিবি/