প্রায় প্রতিটি পাহাড়ি ছড়া থেকে সরকারি রাজস্ব পরিশোধ না করে এবং কেউ কেউ রাজস্ব পরিশোধের পরও বালু উত্তোলনের নীতিমালা না মেনে ক্রমাগত বালু উত্তোলন করে চলেছেন। এভাবে নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলনের ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ-প্রকৃতি।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা প্রশাসনকে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টি অবহিত করলে প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে ২৯০ গাড়ি অবৈধ বালু জব্দ করে। জব্দকৃত বালুর আনুমানিক মূল্য ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এদিন দুপুরে বিলাসের পাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অবৈধ বালু তুলে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। যেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে সেই ছড়ার দুটি পাড়ই ভেঙে পড়ছে।
এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলার নেওয়াজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখানে যারা বালু তুলছে তাদের কোনো কাগজপত্র নেই। নিজেদের খেয়ালখুশি মতো তারা আমাদের এলাকার ক্ষতিসাধন করে বালু উত্তোলন করছেন। বালু উত্তোলনের ফলে আমার বাড়ির সীমানাও ভেঙে পড়ছে।
এলাকার বর্তমান কাউন্সিলার মো. আবদুস শহীদ বাংলানিউজকে বলেন, মো. হাবিব মিয়া, মো. হেলাল উদ্দিন, রিপন মিয়া, আল-আমিন এবং আবদুর রব এই ৫ জন এলাকার অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, বিলাশের পাড় এলাকার মোট ৫টি স্পটে প্রায় ২ মাস ধরে এখানে বালু উত্তোলন চলছে। তাদের নিষেধ করা হলেও তারা কারো কথা শোনেন না।
এলাকাবাসী জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে এলাকার রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ কালর্ভাট অনেকের বাড়িঘর ও ধানি জমির ক্ষয়ক্ষতিসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জানালেও কোনো প্রতিকার হয়নি।
বৃহস্পতিবার অবৈধ বালু তোলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বালুসহ দুটি ট্রাক জব্দ করে থানা নিয়ে যায়। বিকেলে শ্রীমঙ্গল ভূমি অফিসের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা সাধন চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বিলাসছড়া ভটেরতল এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্তূপকৃত ২৯০ ট্রাক বালু জব্দ করা হয়। জব্দকৃত বালু স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুস শহীদের কাছে জমা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি শ্রীমঙ্গল থানাকে অবগত করে অবৈধ বালু ভর্তি ট্রাকগুলো আটক করিয়েছি। ভূমি অফিসের সহকারী তহসিলদার সাধন চন্দ্র দাসকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
বিবিবি/এমজেএফ