জাতিসংঘ জলবায়ু সংস্থা (ইউএনএফসিসিসি) ও ইতালি সরকারের মধ্যে সই হওয়া এই চুক্তির আওতায় নতুন একটি ফেলোশিপ কর্মসূচি নেওয়া হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেখা দেওয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর দীর্ঘদিনের দাবির ভিত্তিতে প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ইতালি জাতিসংঘের সঙ্গে এই চুক্তি সই করলো।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জার্মানির বনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের হাই লেভেল কনফারেন্সের এক ফাঁকে এই চুক্তি অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের ১৯৬টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান বা তাদের মনোনীত প্রতিনিধিরা এই হাইলেভেল সেগমেন্টে অংশ নিচ্ছেন। ৬ নভেম্বর এই সম্মেলন শুরু হয়।
এই চুক্তির আওতায়, এক বছরের (ক্ষমতা) অগ্রগতির দক্ষতা এবং ইনস্টিটিউশনাল ট্রেনিং প্রোগ্রামে ক্যাপাসিটি অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রাম" শিরোনামে নতুন এ কর্মংসূচিটি দেশগুলোর মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা বিকাশে অবদান রাখবে। যা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এমন দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে।
জাতিসংঘ বলছে, টেকসই উন্নয়ন প্রেক্ষাপটে জলবায়ু পরিবর্তনের উপর উদ্ভাবনী বিশ্লেষণাত্মক কাজে সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশ্নে উৎসাহ ও উদ্ভাবনী বিকল্প তৈরি করতে পারে এমন বিশেষজ্ঞদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা ও তাদের বিশ্বের সামনে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্রগুলিতে তরুণ এবং প্রতিশ্রুতিশীল পেশাদার নেতৃত্বের সম্ভাবনাকে উৎসাহীত করা যাবে।
এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন নির্বাহী সচিব প্যাট্রিসিয়া এস্পিনোসা।
তিনি বলেন, ‘আমি এই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা কর্মসূবিটি চালু করার জন্য এগিয়ে আসায় ইতালি সরকারকে আমার ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সিডস’ ও এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে। ওই দেশগুলোর জলবায়ুগত প্রভাবগুলির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে। ’
এসময় ইতালির পরিবেশ, ভূমি ও সাগর বিষয়ক মন্ত্রী গিয়েন লুকা গ্যালিট্টি বলেন, ইতালিয় সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যক্তিবর্গ, প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলার জন্য কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য ‘জলবায়ু-বন্ধুত্বপূর্ণ’ পদ্ধতিতে টেকসই উন্নয়নের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই কর্মসূচির আওতায় সিডস ও এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর পেশাজীবী, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞদের একটি বিস্তৃত পরিসর, জাতীয়, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় সরকারি সংস্থার কর্মী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং মন্ত্রণালয়গুলোর দক্ষতা বাড়াতে ২৫ লাখ ইউরোর (২৫ কোটি টাকা) তহবিল গঠন করা হবে। যা প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের জন্য চালু করা হবে। এই তহবিলের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য এক বছরের ফেলোশিপ দেয়া হবে। যা আরো এক বছর বাড়ানো হতে পারে। ফেলোরা জাতিসংঘ জলবায়ু সংস্থার কার্যালয়ে কাজ করারও সুযোগ পাবেন। এতে তারা প্যারিস চুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিতে কাজ করতে সক্ষম হবেন। ফলে তারা জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অংশ (এনডিসি), বিশ্বব্যাপী জলবায়ু কর্মসূচী, অর্থায়ন, আইনি, নিয়ন্ত্রক এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোসহ যেকোন প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষ হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
আরএম/জেডএম