জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার আমরাইল চা বাগানের ৩ নং সেকশনে নতুন চা আবাদের নামে বিশালাকৃতির এ গাছ দুটিকে ক্ষতিগ্রস্ত বৃক্ষ বলে একটি সম্পূর্ণ এবং অপরটি অংশিক কেটে ফেলা হয়। গোপন সূত্রের ভিত্তিতে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে একটি বটগাছের একাংশ রক্ষা পায়।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর তিনটায় সরেজমিন আমরাইল চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বিশালাকৃতি দুটি শতবর্ষী গাছের মধ্যে একটি গাছ সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়েছে এবং অবশিষ্ট বটগাছটির দুটো বিশাল ডালের মধ্যে একটি ডাল কর্তন করে ফেলা হয়েছে। তবে গাছের কাঠে কোনো ক্ষতের চিহ্ন দেখা যায়নি।
মৌলভীবাজার রেঞ্জের ফরেস্ট গার্ড মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে চার জনের একটি দল এসে মাপজোক করে কাঠ জব্দ করে।
স্থানীয় শ্রমিক অমূল্য বুনার্জী(৮৫) বলেন, ছোট বেলা থেকে এই গাছগুলো দেখে আসছি। প্রথমে আমরা নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা কে শুনবে বাবু। এ দুই বটগাছে ফল ধরলে নানা রকমের পাখি এখানে আসতো।
মঙ্গলবার একটি বটগাছ ও বুধবার অপর বটগাছটির অর্ধেক অংশ কাটা হয় বলে জানান অমূল্য বুনার্জী।
আমরাইল চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, গাছগুলোর ভেতরে ক্ষত ছিল; আর নতুন ট্রি-প্লান্টেশনের জন্য বাধ্য হয়েই কাটতে হলো। প্লান্টেশনে তো নতুন গাছ লাগানে হবে। এর ফলে পরিবেশের উপকার হবে।
শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এবং সিনিয়র সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ১৪ ফুট বেড়ের (প্রস্থ) একটি বিশালাকৃতির বট গাছের পরিপূর্ণতা অর্জন করতে শত বৎসর লেগে যায়। এই গাছ দুটো তো রাস্তার পাশেই ছিল, কাটার কী এমন প্রয়োজন দেখা দিল?
সিলেট বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আর.এস.এম মুনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই আমরাইল চা বাগান কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে এই গাছগুলো কেটেছে। এই গাছ দুটো ধ্বংস করে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমি স্থানীয় বন বিভাগের লোকজনে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ১৪ টুকরায় কর্তনকৃত ১৭৪ ঘনফুট (সিএফটি) কাঠ জব্দ করেছি।
বটসহ অন্যান্য ফলদবৃক্ষ কর্তন থেকে বিরত থেকে সেগুলোকে সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। আর শতবর্ষী বটগাছ তো কোনোক্রমেই কর্তৃন করা যাবে না বলে জানান সিলেটের ডিএফও আর.এস.এম মুনিরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
বিবিবি/জেডএম