যে প্রাণীটিকে নিয়ে কথা-সেটি হলো ‘হনুমান’। তাও আবার লোকালয়ে! একেবারে গ্রামে।
বগুড়ার শেরপুরে খানপুর ইউনিয়নাধীন শালফা গ্রামে চলছে এমন অবস্থা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার ঘটনা। এক বাড়ির খড়ের গাদার কাছে একটি হনুমানকে দেখতে পান কয়েকজন। আর এ খবর মূহূর্তে ছড়িয়ে যায় পুরো এলাকায়। খানপুরের তোজাম মোল্লার বাড়ির সেই খড়ের গাদাটিও সঙ্গত কারণেই এখন বেশ আলোচিত। তবে মানুষের এতো উৎসাহ যখন, তখনই কী আর দুষ্টুমি না করে স্থির থাকা যায়! সেই থেকেই বুঝি পুরো পাড়া দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে নতুন অতিথি। আর পেছন পেছন ছুটতে থাকেন গ্রামবাসী।
দিনব্যাপী আসলে মানুষের সঙ্গে লোকুচুরিই করে হনুমানটি। অচেনা পরিবেশ, মানুষের বাড়তি উৎসাহ হনুমানটিকে ভয় পাইয়ে দেওয়াও স্বাভাবিকই বটে। আবার গ্রামবাসীও হনুমানের আচরণ, প্রকৃতি ধারণা করতে না পারায় শঙ্কার মধ্যেও পড়েন। তবে গ্রামবাসী-বন্যপ্রাণীটির কোনো পক্ষই কেউ কারো দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
শেরপুর সামাজিক বনবিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার আইনুল হক হনুমানের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বনের হনুমান কিভাবে লোকলয়ে আসলো সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি হনুমানটি উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ প্রাণীটিকে বিরক্ত না করলে নিজে থেকে কারো কোনো ক্ষতি করে না। তাই ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
গ্রামবাসী জহুরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেনসহ অনেকেই বাংলানিউজকে জানান, একপাড়া থেকে আরেক পাড়ায় দাপিয়ে বেড়ায় হনুমানটি। দিনব্যাপী তাদের এলাকায় যেন হনুমানের রাজত্ব চলে। তবে গ্রামের ছোট-বড় কোন মানুষের পক্ষ থেকে হনুমানকে আক্রমণ করা হয়নি। হনুমান কারো কোন ক্ষতি করেনি। কিন্তু হনুমানটি উদ্ধারে সংশ্লিষ্টরা কেউ এগিয়ে আসেনি।
স্থানীয়রা মনে করছেন, ভারত থেকে আমদানির ফল বহনকারী গাড়িতে করে বাংলাদেশে হনুমানটি চলে আসে। মাস দুয়েক আগে সিরাগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় অনুরুপ একটি হনুমানের দেখা মেলে। আর এটি সেই হনুমান বলে ধারণা করছে অনেকে।
সম্প্রতি বগুড়ার ধুনট উপজেলায় একটি হনুমান দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন হনুমানটি উদ্ধারের উদ্যোগও নেন। কিন্তু হনুমানটি ধরতে ব্যর্থ হয় সংশ্লিষ্টরা। পরে রাতের আঁধারে সেই হনুমান শেরপুর উপজেলায় প্রবেশ করে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৮
এমবিএইচ/ইইউডি/জেডএস