গত ২ দিনের ঝড়ে এ পর্যন্ত বিশালাকার ৫টি গাছ উপড়ে পড়েছে। এছাড়া প্রায় শতাধিক গাছের ডালপালা ভেঙে জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জানা যায়, সোম (৭মে) ও মঙ্গলবার (৮মে) দুই দিনের কালবৈশাখী ঝড়ে দেশের বৃহৎ এ রিজার্ভ ফরেস্টের প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে উদ্যানের প্রবেশ পথে একটি শতবর্ষী আমগাছ উদ্যানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কে পৃথকস্থানে ২টি বনাখ গাছ, লাউয়াছড়ার ভেতরের রেল লাইনের উপর একটি টিকরাশি গাছ, উদ্যানের প্রবেশদ্বারে একটি ডুমুর গাছ ও বনের ভেতর শতাধিক গাছগাছালির ডালপালা ভেঙে পড়েছে। এছাড়া গাছ পড়ে উদ্যানের অবকাঠামোরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ মে) বিকেলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সরেজমিনে দেখা যায়, উদ্যানের প্রবেশ পথে একটি শতবর্ষী আমগাছ উপড়ে পড়েছে। এতে পর্যটকদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। আম গাছটি পড়ে সদ্য নির্মিত একটি পর্যটক ছাউনি ভেঙে গেছে। বনের মধ্যে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গাছের ডালপালা। ফলে উদ্যানের সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়েছে ব্যাপকভাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাণ ও প্রকৃতি।
এছাড়া গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ায় বনের পশুপাখিদের আবাসস্থলের ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানান, ঝড়ের তাণ্ডবে যে গাছগুলো ভেঙে পড়েছে তার মধ্যে ডুমুর ও বনাখ জাতীয় গাছগুলো পশুপাখির খাদ্যের ভাণ্ডার। এ গাছগুলো ভেঙে পড়ায় বন্যপ্রাণীর বেশ ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা ভাঙায় বানররা বাইরে চলে এসেছে। পশুপাখিরা দিকভ্রান্ত ছোটাছুটি করছে বনের মধ্যে। ফলে বন্যপ্রাণীর আবাস্থল ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় প্রাণ ও প্রকৃতির ভারসাম্য হারিয়েছে।
এদিকে কালবৈশাখী ঝড়ে মঙ্গলবার (৮মে) ভোরে লাউয়াছড়া উদ্যানের মধ্য দিয়ে অবস্থিত কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সংযোগ সড়কের বিভিন্ন জায়গায় গাছ ও বৈদ্যুতিক পিলার পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েকটি গাছ সরিয়ে ছোট যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। কিন্তু রাস্তায় একাধিক জায়গায় গাছ পড়ে থাকায় বড় ধরনের কোনো যানবাহন ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারছে না।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এএম শামসুল মুহিত চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে উদ্যানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে বিশাল ৫টি গাছ ও একটি ছাউনি উল্লেখযোগ্য। বনের গহীনে প্রবেশ করে আমাদের বন রক্ষকরা দেখবে আর কোন ক্ষয়ক্ষতি আছে কিনা। তারপর বিস্তারিত বলা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, মে ৮ ২০১৮
আরএ