শুকনো ধূসর ডালটিতে হঠাৎই ‘বাসন্তী-লটকনটিয়া’র সবুজ রঙে ভরে উঠে। ডালে ডালে হাঁটাহাটি করার পাশাপাশি তাদের একে অপরের সঙ্গে খোঁচাখুঁচি করতে ভুল করে না।
‘বাসন্তী-লটকনটিয়া’ এর ইংরেজি নাম Vernal Hanging Parrot এবং বৈজ্ঞানিক নাম Loriculus vernalis। এই পাখিটি Psittacidae পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য। এরা শক্তিশালী ঠোঁটের পাখি। পাখি বিষয়ক আলোকচিত্রী সুলতান আহমেদ চলতি বছর এই ছবিটি হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে তুলছেন।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিষয়ক গবেষক ও লেখক ইনাম আল হক বলেন, ‘এটি ছোট আকারের টিয়া। এদের দেহটি অনেকটাই গোলগাল। ঠোঁটের আকার ছোট এবং সেটি পাশ থেকে চাপানো। ছোট আকৃতির কিছুটা গোলাকার লেজ রয়েছে তাদের। এরা আমাদের দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি। ’
আকার-আকৃতি এবং খাবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাসন্তী-লটকনটিয়া’ দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৪ সেন্টিমিটার। লাল ঠোঁট এবং সবুজ দেহের পালকগুলো ঔজ্জ্বল্য বেশি। যা দূর থেকে আকর্ষণ করে। এদের কোমরও লাল। পায়ের রঙ কমলা। পুরুষ পাখিটির গলা নীল। বিভিন্ন ধরনের রসালো ফল, ফুলের মিষ্টি রস, বন্য ডুমুরের নরম ফলত্বক প্রভৃতি এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে।
প্রজনন সম্পর্কে তিনি জানান, ‘ইংরেজি বৎসরের শুরু মাস থেকে জুন পর্যন্ত এদের প্রজনন ঋতুর মৌসুম। তখন প্রকৃতিক গাছের গর্তে প্রায় ১ মিটার গভীরে ২-৪টি করে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো চকচকে সাদা। তবে মাঝে মাঝে বাদামিও হয়ে থাকে। ’
গাছের ডালে অল্প সময়ের জন্য ঝুলে থাকতে পছন্দ এরা। এ ক্ষেত্রে তাদের ঠোঁট এবং পা-কে ব্যবহার করে বলে জানান প্রখ্যাত পাখি গবেষক ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
বিবিবি/এএটি