ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ভোরের রাবার শ্রমিকের কস আহরণ

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৯
ভোরের রাবার শ্রমিকের কস আহরণ শ্রীমঙ্গলের রাবার শ্রমিক। ছবি : বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: সূর্য উঠছে পূর্ব কোণজুড়ে। চা বাগানের একপাশে চা গাছের সুদীর্ঘ সারি; অন্যপাশে বিস্তৃর্ণ রাবার বাগান। মাঝখান দিয়ে পাকা সড়ক চলে গেছে সুদূরের পানে। সেই সূর্যালোক এসে পড়েছে চা আর রাবার গাছের পাতায় পাতায়। 

চা বাগানে চা গাছের পাশাপাশি চাষ করা হয় রাবারের। এর শ্রমিকদের কর্মপরিকল্পনা এবং কর্মকাণ্ডে রয়েছে কিছুটা ভিন্নতা।

এরা মূলত ভোরের শ্রমিক। ভোরে রাবার কস আহরণে ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।  

চা শ্রমিকদের কাজ শুরু হয় মূলত সকাল ৯টা থেকে। কিন্তু রাবার শ্রমিকদের দিবসের কর্মসূচি শুরুর সময় সকাল ৬টা। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কাজে নেমে পড়তে হয়। টানা ছয়-সাত ঘণ্টা কাজ করার নির্দেশনা পালন করেন তারা।  

চা বাগানের অলিগলি ভ্রমণ করতে গেলে প্রথম সকালেই স্বাগত জানাবেন চা বাগানের রাবার শ্রমিকরা। ভোরের মিষ্টি রোদে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাদের কর্মমুখর অবয়ব। মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) শ্রীমঙ্গল শহরতলীর এ রাবার বাগানের পাওয়া গেল নতুন বছরের তেমনই কর্মচঞ্চলতা।  রাবার গাছ থেকে নির্গত কস।  ছবি : বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপনরাবার শ্রমিক লক্ষ্মীপ্রদাস বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করি। এক টানা দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে। আমরা মোট ৫ জন শ্রমিক রয়েছি। আমাদের নিয়ন্ত্রণে ২৪শ’ রাবার গাছ রয়েছে। প্রথম দিন ১২শ’ রাবার গাছে কাজ করার পর পরের দিন আরও ১২শ’ গাছে কাজ করি।  

রাবারের কাজ সম্পর্কে লক্ষ্মীপ্রদাস জানান, একটি বিশেষ ধরনের মাথা বাঁকানো দা এর সাহায্যে গাছের কাটা জায়গাটিকে একটু ছিলে দেই। ওই জায়গাটি নতুন করে ছিলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাদা রাবার কস বের হতে থাকে। এই রস বিকেল পর্যন্ত পড়তে থাকে।  

শীত মৌসুমে বেশি রস বের হয় রাবার গাছ থেকে। গরম মৌসুমে তা কমে যায়। ১২শ’ গাছ থেকে দৈনিক ২৫০ লিটার রাবার সংগ্রহ করা হয়। আর এই কাজের জন্য দৈনিক মজুরি ১০২ টাকা বলে জানান এ রাবার শ্রমিক।  

রাবার শ্রমিকরা গাছে দু’ধরনের কাজ করেন। প্রথম কাজ- গাছের গায়ের কাটা অংশটিকে নতুন করে কেটে দেন। দ্বিতীয় কাজ- কয়েক ঘণ্টা পর গাছ থেকে নির্গত কসগুলো জমে গিয়ে যে রাবারের মণ্ড তৈরি হয়, তারা ওই মণ্ড সংগ্রহ করে চা বাগানের কারখানায় নিয়ে যান। চা বাগানের কারখানা থেকে এগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৮ 
বিবিবি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।