আহত ভুবন চিলটি বর্তমানে সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. মনজুর খালেদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ভুবন চিল ছাড়াও বাংলায় একে বাদামি চিল, গোদা চিল, ডোম চিল বলা হয়।
সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সূত্র জানায়, সম্প্রতি উড়তে না পারা আহত ভুবন চিলটিকে সিলেটের পরিবেশ ও প্রাণী অধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’ এর সদস্য বিনয় সিংহ, রাজীব সিংহ, বিক্রম সিংহ, অর্ণব সিংহ, শুভংকর সিংহ ও প্রবীণ সিংহ উদ্ধার করেন। পরে চিলটিকে তারা সিলেটের বন বিভাগের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ডা. মনজুর কাদের চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ঘুড়িতে বর্তমানে শক্ত বড়শির সুতা ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এ সুতায় বেঁধে গিয়ে ভুবন চিলটি গাছের সঙ্গে আটকে ছিল চারদিন। ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’ এর সদস্যরা রোববার চিলটিকে আমাদের কাছে নিয়ে আসে। বর্তমানে এর চিকিৎসা চলছে।
চিলটির শারীরিক সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, বাম পাশের ডানার ‘ফ্লাইং ফিদার’ (উড়ার ডানা) এর অংশ ভেঙে গেছে। এদের উড়ার জন্য মূল যে ডানাটা দরকার সেটিই ভেঙে গেছে। নতুন করে ফিদার তৈরি হতে অনেক সময় লাগে।
ভুবন চিলটির খাবার সম্পর্কে ডা. মনজুর কাদের বলেন, শহরের ময়লা আবর্জনা এখন ওদের খাবার। যদিও এরা সুযোগসন্ধানী খাদক। এর খাদ্যতালিকা বেশ বিশাল। পানির আশেপাশে আবাস হলে মাছই এদের প্রধান শিকার হয়। অনেক সময় এরা মৃত বা রুগ্ন মাছও খায়। আহত, মৃত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি, স্তন্যপায়ী, ব্যাঙ, সরীসৃপ ও পোকামাকড়ও খায়। গ্রামে হাঁস-মুরগির ছানা ছিনতাই করতে এরা ওস্তাদ। বর্জ্যভূক পাখি হিসেবে কসাইখানা, বর্জ্য-স্তুপ, ময়লাপোঁতা, মাছবাজার ও উচ্ছিষ্ট বর্জ্যও ওরা খায়।
এদের পায়ের নখ এতোই কার্যক্রম যে উড়ন্ত অবস্থায় শিকার ধরে কাবু করে ফেলতে পারে বলেও জানান ডা. মনজুর কাদের চৌধুরী।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এম এম মুনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ভুবন চিল পাখিটির ‘ফ্লাইং ফিদার’ নতুন করে গজাতে প্রায় তিন-চার সপ্তাহ লাগবে। ততদিন পর্যন্ত আমরা তাকে পরিপূর্ণ চিকিৎসা দিয়ে যাবো।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
বিবিবি/জেডএস