চা গাছের সুস্বাস্থ্য এবং চা গাছের অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রতি বছর বাগানে বাগানে প্রুনিং পালিত হয়। বছরের শেষ দুই মাস ও বছরের শুরুর দুই মাস প্রুনিং কার্যক্রম চলায় সেসময় চা কারখানা বন্ধ থাকে।
ইতোমধ্যে চা বাগানে প্রুনিং শেষ হয়ে গেছে। এখন চলছে গাছের গোড়া পরিষ্কার, মাটি নিংড়ানো, জংলি লতাগুল্ম পরিষ্কারের কাজ।
অভিজ্ঞ টি-প্ল্যান্টার এবং বারোমাসিয়া চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার হক ইবাদুল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের চা গাছগুলোতে প্রুনিং করা শেষ। এখন চলছে নতুন কুঁড়ির জন্য অপেক্ষা। প্রুনিংয়ের পর চা বাগানগুলোতে চা গাছের গোড়া সাফা করানো, উলুর ঢিপি সারানো, চা গাছের মাঝে বেড়ে উঠে লতাগুলোকে উপড়ে ফেলে দেয়া প্রভৃতি কাজ চলে।
চা গাছে প্রুনিং করার পর গাছের গোড়ার মধ্যে উলু পোকার (উঁই পোকা) বাসা থাকে। চা গাছের জন্য উলু পোকা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই উলু চা গাছের গোড়া বা শরীরের অংশ খেয়ে ফেলে। তখন চা গাছগুলো মরে যায়। তাই প্রুনিং এর পর আমরা উলুর ঢিপিগুলো পরিস্কার করে থাকি বলে জানান ইবাদুল।
তিনি আরো বলেন, উলুর ঢিপি পরিষ্কারের পাশাপাশি চা গাছে কিছু পরগাছা উদ্ভিদ জন্ম নেয়। তখন ওগুলোকে আমরা পরিষ্কার করি। তারপর শুষ্ক মৌসুমে যাতে করে আগুন না লাগে তার জন্য একটা টিলার প্রায় ২৪ ফুট জায়গা আমরা পরিষ্কার করে রাখি। এগুলো আমরা করি সব ম্যাচিউরড টি-তে (প্রাপ্তবয়স্ক চা গাছে)।
হক ইবাদুল বলেন, ইয়াং-টিতে (বাচ্চা চারা) এই সময় মাটি আচ্ছাদন করে কচুরিপানা দিয়ে মাটি ঢেকে দেয়া হয় যাতে করে মাটির পানি বাষ্প না হয়ে যায়। এটাকে চায়ের ভাষায় বলে ‘মার্চিং’। এ ছাড়া চা বাগানের ক্লোন নার্সারিতে চলে মাটি দিয়ে প্লাস্টিক ব্যাগ ভরার কাজ।
প্রুপিং-এর পর চা বাগানে বৃষ্টিপাত অনেকটা আশীর্বাদ হয়ে আসে। বৃষ্টির পরশ পেলেই সেই কাটা অংশ থেকে নতুন চারা গজাতে শুরু করে বলে জানান অভিজ্ঞ বারোমাসিয়া চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার ইবাদুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৫ ঘন্টা; ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
বিবিবি/এমজেএফ