বসন্তকালই এই মাধবী লতার প্রস্ফুটিত হওয়ার মৌসুম। এসময় প্রকাশিত ফুলেদের গায়ে প্রতিনিয়তই মৌমাছি, প্রজাপতিসহ নানান প্রকৃতিবন্ধুরা নিয়মিত ভ্রমণ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাধবীলতা’র ইংরেজি নাম Hiptage এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hiptage benghalensis। এরা Malpighiaceae পরিবারের উদ্ভিদ। এটি বড় আকারের লতানো উদ্ভিদ। এরা যে গাছের উপর উঠে সেই গাছটি মোটামুটিভাবে দখল করে ফেলে। এর পাতাগুলো দেখতে উপ-বৃত্তাকার। এরা বিপরীত অবস্থানে থাকে। পাতার মাথা চোখা (তীক্ষ্ম)। তিনি বলেন, আরো একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- মাধবীলতাকে বাংলাদেশ থেকে প্রথম নামকরণ করা হয়েছে। এর বৈজ্ঞানিক নামটি ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, একটি অংশে ‘Benghalensis’ শব্দটি আছে। এ নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে এটি বাংলাদেশের ‘অরিজিন’ ফুল। মাধবীলতা বাংলার উদ্ভিদ এবং বাংলাদেশেই এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। ফুলের বর্ণনা করে ড. জসীম উদ্দিন বলেন, ফুলগুলো গুচ্ছাকারে সজ্জিত থাকে। একেকটা গুচ্ছে থাকে বিশ থেকে ত্রিশটা ফুল। প্রতিটা একক ফুলে বোটা আছে এবং তাতে ৫টি করে বৃতি সংযুক্ত। এ ফুলে রয়েছে পাঁচটা পাপড়ি। এর রয়েছে ৫টা পাপড়ি: চারটা ছোট পাপড়ি ও একটি বিশেষ ধরনের বড় পাপড়ি। ছোট পাপড়িগুলো দুধের মতো সাদা রঙের এবং ওই বড় পাপড়ির মাঝখানে হলুদ ছাপ থাকে।
প্রফেসর জসীম উদ্দিন আরো বলেন, এ ফুলের পুংকেশর ১০টা। আকৃতিতে এর মাঝে দৈর্ঘ্যে ৯টা পুংদণ্ড ছোট এবং একটি পুংদণ্ড লম্বা। ফলে মাধবীর ফুলের আকৃতিটা আমাদের অন্য ফুলগুলো থেকে কিছুটা ভিন্ন। এই ফুলটিকে দেখে হঠাৎ করে বর্ণনা করা কঠিন। মানুষ ‘মাধুরীলতা’ ফুলের সঙ্গে ‘মাধবীলতা’র ফুলকে এক মনে করে ভুল করে থাকেন। এর চিরসবুজ বনের লতানো উদ্ভিদ। ভারত, চীন, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের উদ্ভিদ।
মাধবীলতা ফুলটির ফলের গায়ে ৩টি পাখা থাকে: একটি ছোট ও দু’টি বড়। পাখাগুলো ফল বিস্তারে সাহায্য করে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এবং উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
বিবিবি/এএ